চাকরি সূত্রে স্থানান্তর: কর্মীদের অবস্থান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য

চাকরি সূত্রে স্থানান্তর: কর্মীদের অবস্থান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য

সম্প্রতি কোম্পানির কাজে আমাকে একদল বড় সংখ্যক ভারতীয় কর্মচারীদের সঙ্গে দেখা করতে হয়েছিল যাদের কাজের সূত্রে আমেরিকায় বদলি করা হয়েছিল। এই কর্মীদের সবারই বয়স ছিল কুড়ি বছর। কয়েকজন ছিল অবিবাহিত। কিছু ছিল বিবাহিত কর্মী যাদের ঘরে অল্পবয়সি স্ত্রীও ছিল। সাম্প্রতিক অতীতে এইধরনের কর্মচারী, যাদের চাকরি সূত্রে অন্য শহরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ এসেছিল সেইসব দম্পতিরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছিল। কী এমন ঘটেছিল যার জন্য এই ভুল পথ তাদের বেছে নিতে হয়েছিল? কীভাবে এই সমস্যার সমাধানের জন্য কর্মীদের এবং তাদের পরিবারকে সাহায্য করা যেতে পারে? ভবিষ্যতে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য তারা কী ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে? এমনকী, যদি কর্মীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা নাও থাকে তাহলে চাকরি সূত্রে অন্য জায়গায় বদলি হওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার একেবারে শুরু থেকে তাদের অন্যান্য মানসিক সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য একটা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা কী দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে?

যখন আমি এই ঘটনাটা প্রথম শুনলাম তখন তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ল। একজন মানুষ তখন তার প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়ে সদ্য মা হয়েছে, যে তার বাচ্চাকে নিয়ে একা বাড়িতে থাকে। নতুন শহর এবং অজানা-অচেনা পরিবেশ সমাজে তাদের একদম বিচ্ছিন্ন, একা করে তুলেছিল। তাই আমি জানতাম ওই কর্মীরা এবং তাদের স্ত্রীরাও একটা বিরূপ  পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। তাই তাদের সাহায্য করার জন্য আমি তৎপর হয়ে উঠেছিলাম। প্রথমেই আমি বিষয়টার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করতে শুরু করলাম আর দেখলাম যে আমার অভিজ্ঞতাটা মোটেই অনন্য কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। আমার মতো অভিজ্ঞতার মুখোমুখি যারাই হবে তাদেরই অবস্থাটা আমারই মতো হবে। তবে তার মাত্রা আলাদা হতে পারে। কিছু মানুষ থাকে যারা অন্যান্য মানুষের তুলনায় বিরূপ পরিস্থিতির মোকাবিলা ভালোভাবে করতে পারে। আমার এখনকার জানা-বোঝার সঙ্গে তখনকার চিন্তাভাবনার পার্থক্য ছিল। সেদিন যদি আমি আজকের মতো বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সক্ষম হতাম তাহলে যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলাম তাতে বিচলিত না হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক
রাখতে পারতাম।

যে কোনও স্থানান্তর, তা সে নতুন শহর বা নতুন দেশ যাইহোক না কেন, মানুষকে তিনভাবে তা মানিয়ে নিতে হয়। প্রথমত, সাধারণভাবে জীবনযাপন পদ্ধতি, আবহাওয়া, খাদ্যাভ্যাস, বাড়িঘর, জীবনযাত্রার মান এবং পরিকাঠামোগত সমস্যা। তারপর আসে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মানিয়ে নেওয়ার প্রশ্ন। এক্ষেত্রে বাড়িতে এবং কাজের জায়গায় পুরনো ও নতুন সম্পর্কের সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হয়। এবং সবশেষে থাকে নতুন কর্মক্ষেত্রে নতুন কাজের দায়িত্ব এবং প্রত্যাশাগুলোর মোকাবিলা করা। যে কোনও বদলের মুখোমুখি হওয়াটাই একপ্রকার প্রতিবন্ধকতা। তাই সম্ভাব্য পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের ভরসার অভাব দেখা দেয় এবং দিশাহারা বোধ জেগে ওঠে।

এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা গিয়ে নতুন পরিবেশ-পরিস্থিতিকে মানিয়ে নেওয়ার বিষয় নিয়ে অনেক গবেষণা এবং লেখালিখি হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে যে কোনও নতুন সুযোগের সদব্যবহারের একেবারে শুরুতে মানুষের মনে নানা উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং অচেনা-অজানা পরিবেশ সম্পর্কে তাদের মনে একপ্রকার উদ্বেগও জন্মায়। প্রথম প্রথম নতুন কোনও কাজ শুরু করাকে কেন্দ্র করে মানুষের জীবনে মধুচন্দ্রিমা যাপনের পর্যায় চলে। কিন্তু সময় যত এগোয় তত কোনও বদল বা পরিবর্তনকে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে মানুষের মনে রাগ, ভ্রান্ত ধারণা জন্মায়। এর ফলে মানুষের মধ্যে ক্লান্তি, একঘেয়েমি চলে আসে। আমার মনে আছে কাজের জন্য যখন নতুন জায়গায় আমায় চলে যেতে হয়েছিল তখন আমার কোলে ছিল তিনমাসের ছোট্ট একটা বাচ্চা। ওই পরিস্থিতিতে আমার মনে হারানোর ভয় জেগেছিল। আমার মনে হত যখন আমার বাড়িতে আঘাত আসবে তখন আমায় অন্য কোথাও চালান করে দেওয়া হবে। তখন এমন কোনও জায়গা ছিল না, যা আমার নিজের বাড়ি বলে মনে হত। আক্ষরিক অর্থেই তখন যেন আমি রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছিলাম। এই অনুভূতি আমার মনে নতুন বাড়িতে বাস করার মাসখানেক পরেও স্থায়ী হয়েছিল।

নতুন শহর বা দেশে গিয়ে বসবাস শুরু করার পর মানুষের সর্বাঙ্গীণ চেতনা, বোধের  কিছুটা ঘাটতি দেখা দেয়। অর্থাৎ তার চিন্তাভাবনা, চলন-বলন, কাজকর্ম, খাওয়া-পরা প্রভৃতি সবক্ষেত্রেই ঘাটতি দেখা যায়। সেই সময়ে মানুষের মনে হয় পৃথিবীটা খুবই ছোট একটা পাত্রের মতো। তাই সেখানে তাদের চেতনাশক্তি বা বোধশক্তি কেনই বা গুরুত্বপূর্ণ হবে? শুধুমাত্র আমরা সবাই এই পৃথিবীর মানুষ বলে আমাদের সবারই মূল্যবোধ ও সিদ্ধান্তগুলো একরকম হবে, তা নয়। আমাদের সচেতনতা, বোধের ৯০ শতাংশই আসে বাইরে থেকে। এবং সেগুলো সবসময়ে চোখেও দেখা যায় না। যেমন- দৃষ্টিভঙ্গী, মূল্যবোধ এবং ধারণা। ধারণার মধ্যে রয়েছে সৌন্দর্য বিষয়ক ধারণা, সন্তান লালন-পালনের নীতি, সমুচিত বোধ, পাপা-পুণ্যের বোধ, সামাজিক গতিশীলতা প্রভৃতি। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, আমেরিকানরা তাদের বাচ্চাদের খুব ছোটবেলা থেকেই একা, তাদের নিজস্ব বিছানায় শোওয়ানোর  অভ্যাস করায়। তারা বাচ্চাদের চারপাশে ঘেরা বিছানা, বদ্ধ ঘরে শোওয়ানো পছন্দ করে না। মাঝে মাঝে ঘুমের সময়ে বাচ্চাদের কাঁদতে দেখলেও তাদের একা ছেড়ে দেয়। কিন্তু অধিকাংশ ভারতীয় বাবা-মা এসব নীতিতে বিশ্বাসই করে না। এখানে কাদের কাছে কোনটা ঠিক বা কোনটা ভুল সেটা বড় কথা নয়। এটা শুধু দুটো আলাদা দেশে, সভ্যতায় বসবাসকারী মানুষের মধ্যেকার চিন্তাভাবনার পার্থক্য। আমার মনে হয় যত তাড়াতাড়ি আমরা এই দুই পার্থক্য সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হব, কিন্তু কোনটা ভালো বা কোনটা মন্দ সে বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে শুধু পার্থক্যগুলো নিয়ে ভাবব, তত তাড়াতাড়ি আমরা দুটো ভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে মেলবন্ধন করতে সক্ষম হব। নিজের ভালো-মন্দ, পছন্দ-অপছন্দের বিষয়ে মতামত দেওয়ার পরিবর্তে আমি দুটো ভিন্ন মতামতের মিলনে বিশ্বাস করি। এবং এই মনোভাবই আমাদের নতুন পরিবেশ মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করে।

নতুন সংস্কৃতিকে মানিয়ে নেওয়া এবং নতুন কিছু সৃষ্টির মাধ্যমে আমরা ভয় ও সংকোচের বদলে কিছু শিখতে পারি, জানতে পারি, বিকশিত হয়ে উঠতে পারি। যখন আমরা নিজেদের এইভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হব তখনই আমরা নতুন জায়গায় গিয়ে মানিয়ে নিতে পারব, সচ্ছন্দ বোধ করতে পারব, নিরাপত্তাহীনতা ও একাকিত্বে ভুগব না। আমাদের জীবনে যে বড় সুযোগ এসেছে তা হাতছাড়া না করে এভাবেই আমাদের এগিয়ে যাওয়া জরুরি।

এরপর হঠাৎ এমন পরিস্থিতিও আসতে পারে যখন আমার কিছু বোঝা বা জানার আগেই আমায় আবার পুরনো জায়গায় ফিরতে হতে পারে। তখন আমার মনে তা নিয়ে আবার নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। এটা সেই সময় যখন আমরা একটা বিপরীত সংস্কৃতির ধাক্কায় বা বিপরীত স্রোতের মধ্যে গিয়ে পড়ি। একদিন যা আমাদের চেনা-জানা ছিল তার সঙ্গেই অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের সংঘর্ষ বাঁধে। এই পরিস্থিতিতে সহসাই আমাদের মধ্যে নিজের দেশের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো আমাদের চোখে ধরা পড়তে থাকে এবং আমাদের মনে একটা রূপকথার দেশের জন্ম হয়-যেহেতু অন্য দেশে যাওয়ার সূত্রে আমরা বৃহত্তর পৃথিবী দেখে নিয়েছি তাই ওই রূপকথার দেশটা তখন আমাদের নিজের দেশের চেয়ে বেশি ঝলমলে বলে
মনে হয়। সেই সঙ্গে নিজের দেশে ফিরে পুরনো সমাজব্যবস্থার সঙ্গে একাত্ম হওয়াটা তখন আমাদের কাছে বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ দেশের থেকে, দেশের মানুষের থেকে তখন আমরা অনেক দূরে চলে গিয়েছি।

যখন আমি প্রথম প্রথম নতুনকে গ্রহণ করার নিয়ম-নীতি শিখছিলাম তখন তা আমাকে যথেষ্ঠ সমস্যায় ফেলেছিল। কারণ আমেরিকায় থাকাকালীন আমি যেরকম জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়েছিলাম তার সঙ্গে যখন আমি নিজের দেশে ফিরে এলাম তখনকার জীবনযাপন মানিয়ে নেওয়া খুবই অসুবিধা হয়েছিল। কিন্তু আমার ফিরে আসাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়েছিল। আসলে প্রত্যেককেই কোনও না  কোনও সময়ে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। আসল প্রশ্ন হল, এক-একজন এক-একরকমভাবে বিরুদ্ধ পরিস্থিতির মোকাবিলা করে। কেউ আমার থেকে অনেক ভালোভাবে পরিস্থিতি সামলায় আবার অনেকে সামলাতে পারে না।

অন্য শহরে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সফলতা নির্ভর করে একজনের মনে বৃহত্তর পৃথিবী সম্পর্কে পূর্বনির্ধারিত ধারণা বা মতামত না গড়ে তোলার উপর। আর এই মানসিকতা মানুষকে অন্য শহরের বা দেশের লোকের ভাষা, খাদ্য, পোশাক-পরিচ্ছদ, আচার-অনুষ্ঠান, মূল্যবোধ, বিশ্বাস এবং সামাজিক নিয়ম-নীতিকে খোলা মনে গ্রহণ করতে সাহায্য করে। একটা প্রতিষ্ঠানও তার কর্মীদের মধ্যে এইধরনের মানসিকতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে তাদের প্রকৃত উপকার করতে পারে। কর্মচারীদের সামনে একটা গ্লাসকে অর্ধেকটা খালি না দেখিয়ে অর্ধেক ভর্তি হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা একটা সংস্থার পক্ষে অত্যন্ত জরুরি বিষয়; তাদের সামনে দুটো ভিন্ন শহরের পার্থক্য তুলে ধরাটাই এক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কোনটা ভালো বা কোনটা মন্দ, তা বিচার করাটা কখনোই কাম্য নয়। কর্মীদের পরিবার–পরিজনদেরও এইভাবে সহায়তা করা উচিত।

একজন কর্মী বা একটা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেশান্তর বা স্থানান্তর তখনই সম্পূর্ণ সফল হয় যখন তা কর্মীদের পরিবারের প্রত্যেক সদস্য, যাদের ওই কর্মীদের সঙ্গে অন্য শহরে বা দেশে যেতে হয়, তাদের নতুন পরিবেশ মানিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। যদি কর্মীদের স্ত্রীদের মধ্যে ভরসা, বিশ্বাস হারিয়ে যায় অথবা যদি তাদের বাচ্চারা নতুন জায়গায় স্কুলে গিয়ে নানারকম সমস্যার মোকাবিলা করতে না পারে তাহলে স্থানান্তরিত হওয়া একটা বড় সংখ্যক কর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়ে। এর ফলে এক হয় তারা পরিবারের বাধাগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ নির্লিপ্ত হয়ে পড়ে অথবা এই বিষয় নিয়ে তারা লাগাতার বিব্রত থাকে। এই ঘটনায় স্থানান্তরিত হওয়া কর্মচারীদের পক্ষে সংস্থার হয়ে সঠিক দায়িত্ব পালন করা সম্ভবপর হয় না।

একজন কর্মীর কাছ থেকে একটা সংস্থার এটা কখনোই আশা করা উচিত নয় যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে তারা প্রথমেই কাজে পারদর্শিতা দেখাবে। যখন একটা গাছকে এক জায়গা থেকে তুলে নিয়ে অন্য জায়গায় পোঁতা হয় তখন প্রথম প্রথম ওই গাছটির অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন পড়ে। আর এই যত্নের ফলেই গাছটি তাড়াতাড়ি ডালপালা বিস্তার করে সতেজ-সবুজ হয়ে ওঠে। মানুষের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটাই সত্যি।

যখন সংস্থার কর্মীরা কাজের সূত্রে এক শহর বা দেশ থেকে অন্য শহর বা দেশে যায় তখন কোন বিষয়গুলোকে সংস্থার গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখা উচিত:

১. নতুন শহর বা নতুন দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে কর্মীদের মনে সঠিক ধারণা দেওয়া প্রয়োজন। নতুন পরিবেশে গিয়ে যে পার্থক্যগুলো তাদের মানিয়ে নিতে হবে সে সম্পর্কেও তাদের ওয়াকিবহাল করা দরকার। এই সচেতনতার শিক্ষা কর্মচারীদের স্ত্রী এবং বাচ্চাদেরকেও দেওয়া জরুরি।

২. দুই জায়গার সংস্কৃতির মধ্যেকার পার্থক্যগুলোকেই তাদের দেখাতে সাহায্য করতে হবে। দুই ভিন্ন সংস্কৃতির নেতিবাচক ও ইতিবাচক দিক নিয়ে আলোচনা করা নিষ্প্রয়োজন।

৩. নতুন জায়গায় পৌঁছনোর পর যে জিনিসগুলো তাদের খুব তাড়াতাড়ি দরকার পড়বে সেগুলোর একটা তালিকা করে দিতে হবে। কারণ এসব জিনিস হাতের কাছে না পেলে কর্মীদের শুধু যে শারীরিকভাবে সমস্যা হবে তাই নয়। সেই সঙ্গে মানসিক, সামাজিক এবং সংস্কৃতির দিক থেকেও তারা সমস্যায় পড়তে পারে।

৪. যে কর্মীরা অন্য জায়গায় যাচ্ছে তাদের মনে এই আশ্বাস জাগাতে হবে যে তারা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম চালিকাশক্তি। এই প্রেরণা নতুন জায়গায় গিয়ে তাদের শুধু কাজে মন বসাতেই সাহায্য করবে না। সেই সঙ্গে তাদের পরিবারগুলোও খোলা মনে নতুন পরিবেশ মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে।

৫. নতুন শহরে গিয়ে কর্মী এবং তাদের পরিবারের জন্য এমপ্লয়ি অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম বা কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা করতে হবে। এই পদ্ধতি নতুন জায়গায় গিয়ে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিপদে পড়ার আগেই তাদের নতুন পরিবেশ খোলামনে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সুযোগ করে দেবে। সেই সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করবে।

প্রবন্ধটি লিখেছেন ব্যাঙ্গালোরের এক কাউন্সেলর মল্লিকা শর্মা, যিনি কর্পোরেট কেরিয়ায় ছেড়ে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কাজে মনোনিবেশ করেছেন। মল্লিকা কর্মক্ষেত্র বিষয়ক কাজ, কোম্পানির দেশান্তরিত হওয়া  কর্মীদের সুস্থ থাকা নিয়ে কাজ করছেন। ব্যাঙ্গালোরের রিচ ক্লিনিকে তিনি নিয়মিত প্র্যাকটিস করেন।

এই প্রবন্ধগুলো চাকরি সূত্রে কোম্পানির কর্মীদের অন্য জায়গায় যাওয়া, এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে বসবাস করা এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব নিয়ে লেখা হয়েছে। এই বিষয়ে আরও জানতে পড়ুন:

১. We need to acknowledge the emotional impact of migration: Dr Sabina Rao

2. Moving was all of these: a challenge, an adventure and an opportunity to learn about myself: Revathi Krishna.      

Related Stories

No stories found.
logo
হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন
bengali.whiteswanfoundation.org