Santanu
বিকার

অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার

হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন

এ ডি এইচ ডি কী?

তানিয়া দশ বছর বয়সের একটি মেয়ে। স্কুলে তানিয়ার শিক্ষিকারা বার বার তানিয়া সম্বন্ধে অভিযোগ করে থাকেন যে, ভীষণ ছটফটে এবং ক্লাসরুমে ক্লাস চলাকালীন বসতেই চায় না। অন্য বাচ্চাদেরও খুব বিরক্ত করে। পড়ার বাইরে সে প্রত্যেকটি ব্যাপারেই ভীষণ উৎসাহী। বান্ধবীরা তানিয়ার সঙ্গে খেলতে চাইলেও খামখেয়ালিপনা ও প্রত্যেকটি ব্যাপারে তার নিজস্ব তৈরি নিয়ম মানতে বাধ্য করার প্রবণতার জন্য বান্ধবীরা তার থেকে দূরে থাকে। বাড়িতেও তানিয়ার ব্যবহার খুবই আপত্তিকর, যা বাড়ির অভিভাবকদেরও বিরক্তিতে ভরিয়ে তোলে। তানিয়া জানে না, কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল এবং এই ব্যবহার প্রমাণ করে যে, তার জীবনে একটি ডিস‌অর্ডার চলছে।

তানিয়ার মতো অনেক বাচ্চাদের ক্ষেত্রেই এইরকমের ব্যবহার সচরাচর দেখতে পাওয়া যায়। এই রকমের ব্যবহার বাচ্চাদের মধ্যে দেখা গেলে বুঝতে হবে, এটি "অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিস‌অর্ডার"-এর লক্ষণ। এ ডি এইচ ডি একটি নার্ভ ঘটিত রোগ। যাকে ডাক্তারি ভাষায় নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার বলা হয়ে থাকে। এই এ ডি এইচ ডি হলে, বাচ্চারা খুবই অমনোযোগী, ক্ষিপ্ত, আক্রমণাত্মক ও অতি মাত্রায় চঞ্চল হয়ে ওঠে। তারা পড়াশোনা করতে চায় না এবং নিজের ইচ্ছামত চলতে ভালবাসে। 

কোন ধরনের সমস্যা এ ডি এইচ ডি নয়

কিন্তু যদি দেখেন, বাচ্চারা অতিমাত্রায় উৎসাহী, চঞ্চল, খেলাধুলায় আক্রামক, খুবই বখাটে হলেও পড়াশোনায় মনোযোগী তাহলে একথা পরিষ্কার যে, এই বাচ্চারা এ ডি এইচ ডি-তে আক্রান্ত নয়।

এ ডি এইচ ডি-কে লার্নিং ডিসেবিলিটি বা শিক্ষাগ্রহণ সংক্রান্ত বিকার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না। লার্নিং ডিসেবিলিটি এক ধরনের স্নায়বিক ব্যাধি যা মস্তিষ্কের তথ্য সঞ্চালন এবং তথ্য বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।

এ ডি এইচ ডি-র ধরন কী কী

সাধারণত এ ডি এইচ ডি দুই ধরনের হয়ে থাকে। তবে তৃতীয় ধরনেরও দেখা যায় যা প্রথম ও দ্বিতীয়ের কিছু কিছু লক্ষণ একসঙ্গে বহন করে। 

(১) হাইপার অ্যাক্টিভিটি বা আবেগপ্রবণ এ ডি এইচ ডি -

এই প্রথম ধরনের এ ডি এইচ ডি সমস্যায় গ্রসিত রোগীকে শিশু অবস্থাতেই চিকিৎসা করালে সহজে নিরাময় পাওয়া যায়।

(২) অমনোযোগী ধরনের এ ডি এইচ ডি -  

প্রথম ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হলে শিশুরা প্রত্যেকটি ব্যাপারেই অমনোযোগী হয়ে ওঠে। বাবা-মায়েরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই ঘটনাকে আমল দেন না। কিন্তু শিশু অবস্থাতেই যদি বাবা-মায়েরা এই ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখেন ও সময়মতো চিকিৎসা করান তাহলে ভবিষ্যতে সমস্যা উৎপন্ন হয় না। যদি সময় মতো অভিভাবকরা চিকিৎসা না করান তাহলে কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা আরও বাড়তে থাকে এবং এই সমাধান করাটা দুরূহ হয়ে ওঠে।

এ ডি এইচ ডি হলেই যে বাচ্চারা পড়াশোনা বা কিছু শেখায় অমনযোগী হয়ে ওঠে একথা স্পষ্ট করে বলা না গেলেও একথা ঠিক যে, এ ডি এইচ ডি সমস্যায় আক্রান্ত বাচ্চারা পড়াশোনা বা কিছু শেখার ক্ষেত্রে অমনোযোগী হয়ে ওঠে। সেজন্য অভিভাবকদের উচিত বাচ্চাদের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা গেলেই অবিলম্বে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া। বিশেষজ্ঞরা পরিষ্কারভাবে একথার বিশ্লেষণ সহজেই করতে পারেন যে, রোগের ধরন, পারিবারিক ইতিহাস,  রোগীর লক্ষণ কী সমস্যার ইঙ্গিতবাহক। 

এ ডি এইচ ডি এবং লার্নিং ডিসেবিলিটির পার্থক্য

যদিও এ ডি এইচ ডি এবং লার্নিং ডিসেবিলিটি এক নয়, এ ডি এইচ ডি থেকে শিক্ষাগ্রহণ সংক্রান্ত বিকার ঘটতে পারে। দেখা গিয়েছে যে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বাচ্চাদের মধ্যে, এ ডি এইচ ডি এবং লার্নিং ডিসেবিলিটি, দুটিরই প্রভাব একই সঙ্গে উপস্থিত। বাবা মায়েদের এই দুটি রোগের পার্থক্য বুঝতে হবে।

 

এ ডি এইচ ডিলার্নিং ডিসেবিলিটি
সাদৃশ্য
এক ধরনের স্নায়বিক ব্যাধি যা মস্তিষ্কের তথ্য সঞ্চালন এবং তথ্য বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।এক ধরনের স্নায়বিক ব্যাধি যা মস্তিষ্কের তথ্য সঞ্চালন এবং তথ্য বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।
পার্থক্য
বাচ্চারা খুবই অমনোযোগী, ক্ষিপ্ত, আক্রমণাত্মক ও অতিমাত্রায় চঞ্চল হয়ে ওঠে। তারা পড়াশোনা করতে চায় না।আক্রান্ত শিশুর পড়তে, লিখতে, কথা বলতে, বলা কথা শুনে তার মানে বুঝতে, গণিতের সমীকরণ বুঝতে অসুবিধা হয় এবং এই ধরনের শিশু বোধশক্তি সংক্রান্ত সমস্যায় ভোগে।
চিকিৎসা ওষুধ, থেরাপি, কাউন্সেলিং, বিহেভিয়ার এবং রেমিডিয়াল ট্রেনিং-এর মাধ্যমে করা হয়।চিকিৎসা থেরাপি , বৈকল্পিক থেরাপি , একক শিক্ষা ব্যবস্থা এবং বাড়তি সহযোগিতার মাধ্যমে করা হয়।

এ ডি এইচ ডি কেন হয়?

বিশেষজ্ঞরা এখনও পর্যন্ত এ ডি এইচ ডি ঠিক কী কারণে হয় সেকথা বিশদভাবে নির্ধারিত না করতে পারলেও একথা  বুঝতে পেরেছেন যে, নিউরোট্রান্সমিটার-এর সক্রিয়তা নিম্নমাত্রায় থাকার ফলে মস্তিষ্ক সঠিক সংবাদ গ্রহণ করতে পারছে না। এই নিউরোট্রান্সমিটার সঠিক সংবাদ না পাঠাতে পারলে মনোযোগ, আবেগ প্রশমন, সংগঠিত চিন্তাধারা এবং উচিত-অনুচিত বোঝার শক্তি থাকে না। যার ফলে ব্যবহারে অসমানতা পরিলক্ষিত হয়।  

এ ডি এইচ ডি-র সমস্যা নিম্নলিখিত কারণে উৎপন্ন হয় - 

  • বংশগত কারণ - বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে যে, ৮০ শতাংশ রোগীর এই সমস্যা তাঁদের জেনেটিক কাঠামোর থেকে উৎপন্ন হয়েছে।

  • পরিবেশজনিত সমস্যা - দেখা গেছে যে, যদি কোনও গর্ভবতী মহিলা সিগারেট বা মদ খান সেক্ষেত্রে তাঁদের শিশুদের এ ডি এইচ ডি সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

  • মানসিক কারণ - একথাও প্রমাণিত হয়েছে যে, যদি দীর্ঘদিন ধরে শিশুরা কোনও কারণে অযত্নের সম্নুখীন হতে বাধ্য হয় তাহলে তাঁদের মধ্যে এ ডি এইচ ডি-র সমস্যা উৎপন্ন হয়।

  • ব্যবহারজনিত সমস্যা - কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, শিশুদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও মানসিক যাতনার কারণেও শিশুদের মধ্যে এ ডি এইচ ডি-র সমস্যা উৎপন্ন হয়। 

এ ডি এইচ ডি রোগের প্রধান লক্ষণ

এ ডি এইচ ডি রোগের প্রধান লক্ষণগুলো দু রকমের।

অমনোযোগআবেগ প্রবণতা
পড়াশোনায় মন বসছে না এবং ক্লাসে বসে কিছুই বুঝতে পারছে না।সবসময় চঞ্চলতা, কোনও জায়গাতেই এক মিনিট বসতে পারছে না।
বার বার একটি জিনিস পড়েও কিন্তু লেখা বা বলার সময় ভুল করছে।ক্লাসে বসতে চাইছে না, সবাইকে বিরক্ত করছে এবং ক্লাসে ছোটাছুটি করছে।
খাতা, বই, পেন্সিল কোনও কিছুই গুছিয়ে রাখতে পারছে না।হাটতে বললে দৌড়ায়, কখনও উপরে চড়ছে কখনও নীচে নামছে। কারও কোনও কথা শুনতে চাইছে না।
কোনও রুটিন কাজ করতে ভালোবাসে না। রুটিন কাজের কথা বললেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।খেলাধুলায় নিজের ইচ্ছামত নিয়ম সৃষ্টি করে। বন্ধুরা বিরোধিতা করলে মারামারি করে।
চিৎকার চেঁচামেচি করে সবাইকে বিরক্ত করে।বেশি কথা বলে এবং অন্য কাউকে কথা বলতে দেয় না।
কোন জিনিসের প্রতি যত্ন নেই।সহজেই যে কোন ব্যাপারে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়ে এবং এই প্রবণতা চরমে ওঠে।
নিয়মিত কাজকর্ম যেমন, দাঁতমাজা, স্নান করা ইত্যাদি কিছুই সময় মত করতে চায় না।কোনও কিছু না বুঝেই যে কোন কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

এ ডি এইচ ডি রোগ নির্ধারণের পদ্ধতি কী?

এ ডি এইচ ডি সমস্যা নিশ্চিতভাবে জানা বা বোঝার জন্য কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার অবকাশ নেই। অর্থাৎ অন্য কোনও রোগের ক্ষেত্রে যেমন মেডিক্যাল টেস্ট হয়ে থাকে, এ ডি এইচ ডি-র ক্ষেত্রে এরকমের কোনও টেস্ট করা সম্ভব নয়।

এ ডি এইচ ডি সমস্যায় কোনও শিশু আক্রান্ত কি না, সে ব্যাপারে একমাত্র মনোরোগ বিশেষজ্ঞরাই বিভিন্ন লক্ষণ দেখে বলতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা নানা ভাবে এই রোগের মূল্যায়ন করে থাকেন। এমনকি, পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁরা এও দেখে নেন যে শিশুটি অন্য কোনও রোগ বা বিকারে আক্রান্ত কি না। 

কোনও কোনও ক্ষেত্রে একই শিশুর মধ্যে উদ্বিগ্নতা বা অন্য শিখ্যাগ্রহণ সংক্রান্ত বিকার যেমন ডিসলেক্সিয়া বা অটিজম থাকতে পারে। সেই শিশুটি এ ডি এইচ ডি-র সমস্যায় ভুগছে কি না, সেটি বিভিন্ন লক্ষণের পরিমাপ দেখেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা নির্ধারিত করতে পারেন।

বিঃ দ্রঃ – চিকিৎসার ক্ষেত্রে আবেগ প্রবণাতকে প্রাধাণ্য দেয়া হয়।

এ ডি এইচ ডি-র চিকিৎসা

এ ডি এইচ ডি আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা থেরাপি, কাউন্সেলিং, বিহেভিয়ার এবং রেমিডিয়াল ট্রেনিং-এর মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমেও চিকিৎসা করা হয়। আবার বহু ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপিস্ট চিকিৎসক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিকিৎসার মাধ্যমেও শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনেন।

উল্লেখযোগ্য যে, এই চিকিৎসা ক্ষেত্রে কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (সি বি টি) নামক একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই চিকিৎসা থেরাপিতে শিক্ষক এবং অভিভাবকদের বিশাল ভূমিকা থাকে। অভিভাবক এবং শিক্ষকদের শেখানো হয় কীভাবে তাঁরা শিশুদের নিয়ন্ত্রণে রেখে শিক্ষা দেবেন। অভিভাবক এবং শিক্ষকরা যদি এই ট্রেনিং নিয়ে বাচ্চাদের "পজিটিভ" চিন্তাধারায় এগিয়ে নিয়ে সমাজের মূল স্রোতে চলার জন্য বিশেষ যত্ন নিয়ে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে থাকেন তাহলে অবশ্যই শিশুরা এই সমস্যা কাটিয়ে উঠবে। 

এ ডি এইচ ডি আক্রান্ত শিশুর যত্ন

এ ডি এইচ ডি আক্রান্ত শিশুদের বাবা মায়েরা বেশিরভাগ সময় তাদের শিকশাগত যোগ্যতা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেন। এই সমস্যাটির সঙ্গে পরিচিতি বেড়ে যাওয়ার পর তাঁরা বুঝতে পারেন যে এ ডি এইচ ডি আক্রান্ত শিশুদের পরিচালনা করা সম্ভব।

যত্ন নেবার কিছু নির্দেশিকা –

  • এ ডি এইচ ডি-র বিষয়ে বিশদে জানুন

  • এ হেন শিশুদের পড়াশোনা না করতে পারার দুশ্চিন্তার হাত থেকে মুক্তি দিন। তাদের ছোট ছোট কাজের প্রশংসা করুন।

  • আপনার শিশুকে তার ব্যবহার বদলাতে উৎসাহ দিন – পজিটিভ রিইনফোর্স‌মেন্ট

  • প্রত্যেক দিন একই নিয়ম বা রুটিন মেনে চলুন

  • শিশুটির বই, খেলনা, জামা কাপড় গুছিয়ে একই জায়গায় রোজ রাখুন

  • আপনার সন্তানকে ডায়রি লেখার অভ্যাস করান

  • আপনি কোন এ ডি এইচ ডি সহায়তা সংস্থানে যোগ দিতে পারেন যা আপনাকে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে 

বয়স্কদের এ ডি এইচ ডি সমস্যা

যে শিশুদের এই সমস্যা হয় এবং যখন এই সমস্যা নিবারণ হয় না, তখন ক্রনিক সমস্যার মতো এটি চলতে থাকে ও শিশুরা বয়স্ক হওয়ার পরেও এই সমস্যা থেকে যায়। এই সমস্যা যেহেতু খুব তীব্র আকারে প্রকট হয় না সেজন্য বহু ক্ষেত্রেই চিকিৎসা হয় না। তবে এই সমস্যায় আক্রান্ত বয়স্করা সমাজের মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে উদাসীন ভাবে জীবন কাটান। এই সমস্যাগুলির নিবারণ হয় না, কারণ সমাজের মানুষেরা আজও সেভাবে এই রোগের সম্বন্ধে অজ্ঞানতাই পোষণ করেন। 

বয়স্কদের মধ্যে যে লক্ষণ দেখা যায়

  • প্রতিটি ক্ষেত্রেই অমনোযোগী।

  • নিয়মিত কোনও কাজেই অরুচি।

  • কোনও কাজে আবেগপ্রবণতা এবং হঠকারী সিদ্ধান্ত।

  • গাড়ি চালালে বিক্ষিপ্তভাবে গাড়ি চালাতে পছন্দ করে।

  • কোনও কথা শুনতে চায় না এবং কথা চলাকালীন বার বার সে, যে বলছে তাকে থামিয়ে নিজের কথা বলে।

  • কোনও কাজেই গুছানো নয়।

  • কোনও কাজ করার কথা দিলে সেই কথা না রেখে, কীভাবে কাজ করবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগে।

  • নিজের উপর আত্মবিশ্বাস নেই বললেই চলে ও অন্যের সাহায্য না পেলে ভেঙে পড়ে। 

বয়স্কদের মধ্যে এ ডি এইচ ডি নির্ধারণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি

বয়স্কদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে একথা বোঝা দুরূহ হয়ে ওঠে যে, কোনও মানুষ এ ডি এউচ ডি রোগে আক্রান্ত কি না যেহেতু বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা খুবই অল্প মাত্রায় প্রকাশ পায়। মহিলাদের মধ্যে, এটি অনেক সময় উদ্বিগ্নতার রূপে প্রকট হয়।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের এই ক্ষেত্রে রোগে আক্রান্ত মানুষটির পূর্ব ইতিহাস খতিয়ে দেখে তবেই কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়। যত্ন সহকারে রোগীর ব্যবহার, চাল-চলন, চিন্তা-ভাবনা ও পূর্বের ঘটনাবলি পরীক্ষা করে তবেই বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসা করে থাকেন। 

এই ডি এইচ ডি-র সঙ্গে মানিয়ে চলা

এই ডি এইচ ডি-তে আক্রান্ত ব্যক্তি, অন্য কোন সাধারণ ব্যক্তির মতো কাজে সাফল্য অর্জন করতে পারেন। তবে তাঁকে, এই সমস্যার মকাবিলা করতে হবে।

  • এই সমস্যার বিষয় বিশদে জানুন

  • আপনি নিজের কথা বলুন, নিজেকে বুঝুন

  • প্রয়োজন অনুযায়ী জিবনে পরিবর্তন আনুন

  • পছন্দসই কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন

এ ডি এইচ ডি বুদ্ধিহীনতার লক্ষণ নয়। আপনার অন্তরের শক্তিকে চিনুন। আশা ছাড়বেন না। 

এ ডি এইচ ডি বিশেষজ্ঞ

  • ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট - এই বিশেষজ্ঞরা রোগীর মনস্তত্ব ও আবেগপ্রবণতাকে বিশেষভাবে নিরীক্ষণ করে তারপর সাইকোথেরাপির প্রয়োগ করেন।

  • এডুকেশনাল সাইকোলজিস্ট - এই বিশেষজ্ঞরা রোগীর মনোযোগ, পড়াশোনার প্রতি রুচি ও বুদ্ধিদীপ্ততার পরিমাপ বোঝার পর চিকিৎসার নির্দিষ্ট পরামর্শ দেন।

  • স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গোয়েজ প্যাথোলজিস্ট - রোগীর বলার ধরন-ধারণ ও বোঝার ক্ষমতা নির্ধারণ করেন।