বিকার

মানসিক উদ্বেগের মোকাবিলা- কী বলছেন মাহিন আলি খান

হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন

মানসিক উদ্বেগের শিকার হলে একজন মানুষের কীরকম দশা হয় বা মানসিক উদ্বেগে আক্রান্ত বলতে ঠিক কী বোঝায় সে সম্পর্কে বহু মানুষেরই সঠিক ধারণা নেই। একজন মানুষ, যে অনেক বছর ধরে উদ্বেগজনিত সমস্যার শিকার হয়েছে এবং উদ্বেগজনিত আতঙ্ক কীভাবে তার মস্তিষ্কের ব্যাপক ক্ষতি করে চলেছে, সেই সঙ্গে কীভাবে মানুষ সেই সমস্যার মোকাবিলা করতে পারে, তা নিয়ে মাহিন আলি খান তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট @mentalexotica-য় বহু তথ্য তুলে ধরেছেন। এখানে মানসিক উদ্বেগে আক্রান্ত মানুষের জন্য তাঁর টুইট করা কয়েকটি নির্দেশিকা আলোচনা করা হয়েছে-

  • নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে: কাজের ভার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছুটোছুটি করা ও সেইসব কাজ সম্পূর্ণ করা।

  • বাড়ির বাইরে বেরনো জরুরি। বাইরে হাঁটাহাঁটি বা দৌড়নোর জন্য যেতে হবে। শরীরচর্চা করতে হবে। এভাবে সীমিত পরিসরে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

  • পরিচিত মানুষজন, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মেলামেশা করা দরকার। কিন্তু দয়া করে নিজের বর্তমান সমস্যার কথা তাদের অবশ্যই জানাতে হবে।

  • মদ্যপান এবং অন্যান্য নেশার বস্তু থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। নেশা ছাড়তে না পারলে উদ্বেগ দূর হতে দেরি লাগে। উদ্বেগ বারেবারে ফিরেও আসতে পারে এবং তা আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

  • নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টা করতে হবে। দয়ালু, ভদ্র হওয়া প্রয়োজন। আঘাত সহ্য করার ক্ষেত্রে নিজেকে ধৈর্যশীল করে তুলতে হবে।

  • প্রয়োজনীয় ওষুধ নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। দরকার মতো সেই ওষুধ খেতে হবে। ওষুধের প্রয়োজন নেই- সেকথা ভাবা ঠিক নয়।

  • প্রকৃতির সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানো জরুরি। সম্ভাব্য উদ্বেগ-বিরোধী ওষুধ হিসেবে এটাই হল প্রকৃতপক্ষে কার্যকরী উপায়।

  • নিজের বিপদ বা ঝুঁকির ক্ষেত্রটি চিহ্নিত করতে হবে এবং নিজের সুস্থতার ক্ষেত্রে যেসব মানুষ, জায়গা বা পরিস্থিতিকে সম্ভাব্য ক্ষতিকারক বলে মনে হবে সেগুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে।

  • নিজের মানসিক উদ্বেগের সমস্যাকে অবহেলা করা যাবে না। সমস্যাকে জিইয়ে রাখাও উচিত নয়।

  • উদ্বেগজনিত সমস্যায় নিজে বিপর্যস্ত হলেও তা যেন অন্যের জন্য ক্ষতিকারক না হয়। নিজের মধ্যেই সবরকম সমস্যা সীমাবদ্ধ রাখা জরুরি।

মাহিন একজন মানসিক উদ্বেগে আক্রান্ত মানুষের সামাজিক প্রতিবন্ধকতার দিকেও আলোকপাত করেছেন। তাঁর মতে উদ্বেগ ঠিক কেমন হয় সে সম্পর্কে মানুষের সঠিক ধারণাই থাকে না। একজন মানুষ যখন উদ্বেগের শিকার হয় তখন তার চারপাশে থাকা মানুষজন তাকে নিয়ে মোটেই স্বস্তিতে থাকে না এমনকী অসংবেদনশীল মানুষের চোখে ওই মানুষটি বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। মাহিন টুইট করে বলেছেন, ''আমি উপলব্ধি করেছিলাম এই লেখার মধ্য দিয়ে আমি এই উদ্বেগের সমস্যাটিকে প্রকাশ্যে আনতে পারব, যে সমস্যাটিকে প্রায়শই মানুষ দুর্বলতা বা মানসিক ব্যর্থতা হিসেবে বিচার করে।'' মাহিন তাঁর এই চিন্তাভাবনার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন, ''এটি সত্যিই একপ্রকার দুর্বলতা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে এই সমস্যা একজন মানুষকে খুব দুর্বল প্রতিপন্ন করে। অর্থাৎ এই পরিস্থিতিতে মানুষের করুণার চেয়ে সহানুভূতিই অগ্রাধিকার পায়।'' মাহিনের সম্পূর্ণ টুইটার থ্রেডটি আপনারাও পড়তে পারেন।