শিক্ষা

সাক্ষাৎকার: ছাত্রদের পরীক্ষার চাপ সামলানো

শিক্ষকরা অনেক সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদের ওপর পরীক্ষার চাপ সৃষ্টি করেন।

হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন

একটি মেধাবী ছাত্র এবং একটি সাধারণ ছাত্র উভয়ই পরীক্ষার চাপ অনুভব করে। বেশীরভাগ সময় এই চাপের পেছনে শিক্ষকের অবদান থাকে। স্কুলের কর্তৃপক্ষ সর্বদা ভাল ফলের আশা রাখেন এবং শিক্ষকদের মাধ্যমে ছাত্রদের ওপর দাবী করেন। স্বাভাবিকরূপে, শিক্ষকরা অনবরত ছাত্রদের ওপর বেশী নম্বর এবং সফলতার জন্য প্রবল চাপ সৃষ্টি করেন। অথচ শিক্ষকরাই কিন্তু সব থেকে বেশী এই চাপের প্রভাব অনুভব করেন নিম্নলিখিত দুটি কারনেঃ

  • মেধাবী ছাত্রদের থেকে আরও ভালো নম্বর প্রাপ্ত করা যাতে স্কুলের নাম উজ্জ্বল হয়

  • সাধারণ ছাত্রদের পরীক্ষার ফলের দায়িত্ব নেওয়া

এই প্রবন্ধটি নিমহ্যান্সের ক্লিনিকাল সাইকোলোজির অধ্যক্ষ, ডাঃ এম মাঞ্জুলার সঙ্গে কথা বলে সংরক্ষিত করা হয়েছে যেখানে শিক্ষকরদের দ্বারা অনিচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবার কথা আলচনা করা হয়েছে। ডাঃ মাঞ্জুলা বলেছেন যে কোন শিক্ষকের পক্ষে প্রত্যেক ছাত্রর দিকে সমান নজর রাখা খুবই কঠিন। কিন্তু পরীক্ষার চাপ কমাতে শিক্ষক প্রত্যেক ছাত্রর সাহায্য করতে পারেন। এই বিষয়ে নিম্নলিখিত কিছু প্রশ্ন যা শিক্ষকরা সাধারণত জিজ্ঞেস করেনঃ

আমি কি করে বুঝব যে কোন ছাত্র চাপ বোধ করছে?

দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ভিত্তিতে একজন শিক্ষক খুব সহজেই মেধাবী ছাত্র এবং সাধারণ ছাত্রর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন। ফলাফল নির্বিশেষে শিক্ষক প্রতিটি ছাত্রকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাহায্য করতে পারেন। কিন্তু বেশীরভাগ শিক্ষক মেধাবী ছাত্রদের প্রতি পক্ষপাত করেন। এর ফলস্বরূপ, সাধারণ ছাত্ররা শিক্ষকের নজর কাড়তে বেশী নম্বর সংগ্রহ করবার প্রচেষ্টা চালায়।

শিক্ষক ও ছাত্রের আদর্শ সম্পর্ক কিরকম হওয়া উচিৎ?

  • শিক্ষকদের পক্ষপাতিত্ব ছাত্রদের পক্ষে ক্ষতিকারক।

  • শিক্ষকদের অবহেলায় পড়াশুনায় দুর্বল ছাত্রদের আত্মসম্মানে আঘাত লাগে। শিক্ষকদের দুর্বল ছাত্রদের প্রতি বেশী সংবেদনশীল হওয়া উচিৎ এবং প্রতি মুহূর্তে তাদের উৎসাহিত করা উচিৎ।

পরীক্ষার সময় বাবা-মায়ের সাথে যোগাযোগ কি জরুরি?

পরীক্ষার সময় বাবা-মায়ের সঙ্গে নিশ্চিতরূপে যোগাযোগ দরকার পড়ে না। কিন্তু শিক্ষকদের অবান্তর উপদেশ, যেমন ‘খেলতে যেতে দেবেন না’, ‘টিভি দেখতে দেবেন না’, ইত্যাদিরও কোন প্রয়োজন নেই। এতে হিতে বিপরীত হয়। নিজেদের উদ্বেগ বাবা-মায়ের মাধ্যমে বাচ্চাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।

শিক্ষক হিসেবে আমি কী করে ছাত্রদের পথপ্রদর্শন করব?

যখনই কোন শিক্ষক মেধাবী এবং সাধারণ ছাত্রর মধ্যে ভেদাভেদ করেন, দুর্বল ছাত্ররা নিজের ওপর আর ভরসা পায় না। শিক্ষকের প্রতিটি কথা একটি দুর্বল ছাত্রকে আরও দুর্বল করে তোলে।

ছাত্রদের মনে ভরসা যোগাতে শিক্ষকরা নিম্নলিখিতভাবে ছাত্রদের সমর্থন দিতে পারেনঃ

  • ছাত্রদের পড়াশুনার দৈনিক নামচা বানিয়ে দিন।

  • ছাত্রের কর্মক্ষমতা অনুযায়ী তাকে পথপ্রদর্শন করুন।

  • তার ওপর প্রত্যাশার বোঝা না চাপিয়ে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলুন।

  • ছাত্রের ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করুন।