মাতৃত্ব

আমার মানসিক অসুস্থতা রয়েছে

হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন

মা হওয়ার সিদ্ধান্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন মহিলা যদি মানসিক রোগী হন, বা আগে কোনও মানসিক জটিলতার শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া আরও কঠিন হয়ে যায়। কারণ সেই ক্ষেত্রে মা হবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনাকে অনেক কিছু মাথায় রাখতে হবে। সবার আগে আপনি আপনার মনোচিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সম্ভব হলে আলোচনার সময় আপনার স্বামীকে বা পরিবারের কোনও সদস্যকে সঙ্গে রাখুন। আপনি নিম্নলিখিত বিষয়গুলি নিয়ে একজন মনোচিকিৎসকের সাথে আলোচনা করতে পারেন:

  • অতীতে কোনও মনোরোগের কবলে পড়ে থাকলে, এই অবস্থায় কি তা আবার উঁকি দিতে পারে? মানসিক সাস্থের উপরে কোনও চাপ পড়বে কি? আগে যেই সমস্ত ওষুধ খেয়েছেন তা কি কোনও ভাবে শিশুর কোনও ক্ষতি করতে পারে?
  • যদি আপনি এখন ওষুধের উপরে এখনও নির্ভরশীল হন, তাহলে আপনার শিশুর কি কোনও ক্ষতি হতে পারে? যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে বিকল্প উপায় কী?
  • মাতৃদুগ্ধে কি সেই ওষুধ কোনও প্রভাব ফেলবে?
  • আপনার সন্তানেরও কি একই রকম মানসিক জটিলতা থাকবে?
  • প্রসবের পরে কি কোনও সমস্যা দেখা দেবে? আপনি কি কি সাবধানতা অবলম্বন করতে পারেন?
  • একজন অবস্টেট্রিশিয়ানের সাথে কি আলোচনা করবেন তা জেনে নিন।

সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া গেলে মনোরোগ থাকা সত্ত্বেও একজন মহিলা স্বচ্ছন্দে মাতৃত্বের স্বাদ পেতে পারেন। কাজেই মা হবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ছাড়পত্র পাওয়া খুবই জরুরি। কারণ মানসিক জটিলতা আপনার এবং আপনার সন্তানের জন্যে ঝুঁকিপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে। বিভিন্ন কারণে হয়ত চিকিৎসক আপনাকে কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে বলবেন। উদাহরণস্বরূপ, হয়ত সম্প্রতি আপনার মধ্যে কোনও সমস্যা দেখা দিয়েছিল, বা প্রায়শই দেখে দিয়ে থাকে। যে কোনও মানসিক রোগ, যেমন বাইপোলার ডিসঅর্ডার, স্কিৎজোফ্রেনিয়া, ইত্যাদির ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা ঝুঁকি থাকে। কাজেই কোনও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একবার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করুন।

যত্নের পরিকল্পনা

আপনার যদি আগে থেকে কোনও মানসিক ব্যাধি থেকে থাকে, তাহলে যত্নের একটি পরিকল্পনা থাকা জরুরি। একজন অবস্টেট্রিশিয়ান এবং সাইকায়াট্রিস্টের সঙ্গে বসে আপনাকে এই পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। এর ফলে আপনি গর্ভাবস্থায় নিজের স্বাস্থের আরও ভালভাবে খেয়াল রাখতে পারবেন। আপনার স্বামী বা পরিবার জানবেন যে আপৎকালীন সময় কি করণীয় এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তুত থাকতে পারবেন। এমনকি চিকিৎসকও জানবেন যে এই অবস্থায় তাঁর কার সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

সামান্য জটিলতার কথা বাদ দিলে, মনোরোগ কে জয় করে অনেক মহিলাই কিন্তু সাফল্যের সঙ্গে একজন ভাল মা হয়ে দেখিয়েছেন। সঠিক ধারণা ও পরিকল্পনাই এই ক্ষেত্রে সাফল্যের চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে।