একটি সন্তান জন্মানোর পরে একজন মেয়ের শরীর, মন তথা জীবনে এক বিরাট পরিবর্তন সূচিত হয়। এই বদলকে সহজ ভাবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একজন মহিলার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল তাঁর স্বামীর আন্তরিক সহযোগিতা। এই সময় যদি একজন মা তাঁর বাচ্চার বাবার কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থন পান, তাহলে বাচ্চার জন্ম দিতে গিয়ে তাঁকে শরীর ও মনের দিক থেকে যে ধকল সহ্য করতে হয়েছে, তা সহজেই কাটিয়ে উঠতে পারেন এবং তাঁর দায়িত্ব, কর্তব্যগুলিও পালন করতে সক্ষম হন।
এইসময় একজন বাবার প্রধান কাজ হল —
সন্তান জন্মানোর মুহূর্তে বাচ্চার মায়ের পাশে থাকা এবং চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত করা।
মানসিক ভাবে স্ত্রীকে উৎসাহ দেওয়া এবং সাহায্য করা।
বাচ্চা জন্মানোর ঠিক পরেই মায়ের সঙ্গে তার বন্ধন তত দৃঢ় হয় না। এই ক্ষেত্রে বাবার প্রাথমিক দায়িত্ব হল মায়ের সঙ্গে সন্তানের বন্ধনকে দৃঢ় করতে উদ্যোগ নেওয়া। অর্থাৎ গর্ভজাত সন্তানের প্রতি নাড়ির টান অনুভব করতে একজন মাকে ক্রমশ চালিত করার ক্ষেত্রে বাবার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
মা ও সন্তানের মধ্যে অকৃত্তিম সম্পর্ক গড়ে তোলার কাজে সাহায্য করা।
নতুন মা যাতে ঠিক মতো বিশ্রাম পায় এবং মানসিক দিক দিয়ে চাপমুক্ত থাকতে পারে তা নিশ্চিত করা একজন বাবার অন্যতম দায়িত্ব। এর ফলে মা বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াতে সফল হয়।
সদ্যোজাত যাতে নতুন পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে সেই দিকে লক্ষ্য রাখাও বাবার কর্তব্য।
সমাজ-সংসারের নানা বিধি-নিষেধের জাঁতাকলে পড়ে একজন সদ্য মা যাতে অযথা কোনওরকম মানসিক চাপ অনুভব না করে, তা দেখার ভারও সন্তানের বাবার।
একাধিক সন্তানের পরিকল্পনা থাকলে প্রথমবারের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের নির্দিষ্ট সময়ের ফারাক থাকা জরুরি। এর ফলে একজন মা শারীরিক ও মানসিক ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে পারে। এর জন্য স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
মা এবং শিশুর ভালো থাকার পিছনে পরিবারের ভূমিকা —
সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে একজন মা মানসিক ভাবে কিছুটা অবসন্ন বোধ করতে পারে। এইসময় তার বাড়তি সাহায্যের দরকার। অনেক সময় মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাও দেখা দেয়। এই অবস্থায় পরিবার সেই মাকে নানাভাবে সাহায্য করতে পারে।
সমস্ত দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে নতুনকে স্বাগত জানানো এইসময় পরিবারের মুখ্য কাজ।
নতুন পরিস্থিতিকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মতভেদের অবসান দরকার।
মা ও বাচ্চার বন্ধন দৃঢ় করতে উভয়ের জন্য উপযুক্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা এবং সুস্থ পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্বও পরিবার-পরিজনের পালন করা উচিৎ।