কল্যাণ

আত্মশৃঙ্খলা কিভাবে যোগাভ্যাসে সাহায্য করে?

হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন

যখন আমরা যে কোন ধরণের ব্যায়াম করার কথা ভাবি, প্রথমেই আমাদের মনে যে চিন্তা আসে তা হল কতটা সময় ও শক্তি দরকার এই কাজের জন্য, কতবার আমাদের এটা অভ্যাস করতে হবে, এটা কতটা সোজা বা শক্ত এবং আরও অনেক কিছু। যেকোন ব্যায়াম বা কোন কাজ করতে গেলে যেটা সব থেকে বেশী দরকার সেটা হল আত্মশৃঙ্খলা। আমরা সবাই জানি যে যোগ হল বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী এক ব্যায়াম, যা সারা পৃথিবীর মানুষ নানান ভাবে অভ্যাস করছে। প্রত্যেক প্রকার যোগ মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষাতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ও উপযোগী।

যোগের অন্যতম লক্ষ্য হল আত্মশৃঙ্খলা ও আত্মসচেতনতা। যেকোন প্রকারের যোগাভ্যাসের জন্য যা সবথেকে বেশী দরকার তা হল আত্মশৃঙ্খলা, যেটা ছাড়া কেউ যোগের যথার্থ ফল দেখতে পাবেন না।

পতঞ্জলির যোগসূত্রে আত্মশৃঙ্খলাকে ‘তপস’ বলা হয়েছে। এটাই হল কোন কাজ করবার বা কোন কিছু শেখার ইচ্ছা। আত্মশৃঙ্খলা যেকোন কাজের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা যায় – কর্মস্থলে বেশী কাজের জন্যই হোক বা নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্কের উন্নতির জন্যই হোক, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস মেনে চলার জন্য, নতুন কোন কিছু শেখার জন্য বা নিজের রাগ বা আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই হোক। যোগের ক্ষেত্রে আত্মশৃঙ্খলাকেও নিয়মিত অভ্যাস করতে হয়।

কিছু বৈশিষ্ট্য যা আপনাকে যোগাভ্যাসে আত্মশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সাহায্য করবেঃ

সচেতনতাঃ কোন কাজের উদ্দেশ্য ও ফলের বিষয়ে আগে থেকে জানা থাকলে সেটা আপনাকে লক্ষ্যে অবিচল থেকে একাগ্রভাবে কাজটা করে প্রত্যাশিত ফললাভের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। একই কথা যোগাভ্যাসের জন্যও সত্যি। আপনার প্রয়োজনানুসারে, কি কারণে আপনি যোগাভ্যাস করবেন ও এর ফলে আপনি সুস্পষ্টভাবে কি কি শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন পেতে চান তা জানাটা দরকার। সুস্পষ্টভাবে কোন বিষয়ে জানা ও বোঝা ফলাফল সম্বন্ধে আপনাকে প্রকৃত ধারণা দেবে যা আপনাকে নিয়মিত যোগাভ্যাসে উৎসাহিত করবে।

  • যোগাসন ও তার উপকারিতা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন

  • যিনি যোগ শিক্ষা দেন তাঁর সঙ্গে কথা বলুন ও আপনার কিছু জিজ্ঞাসা করার থাকলে তা জেনে নিন

  • একই মানসিকতার মানুষের সাথে আলোচনা করুন ও যোগাসনের বিষয়ে জানুন

একাগ্রতা বা স্থিরতাঃ এটা ঠিকই যে “সাফল্যের কোন ছোট রাস্তা (শর্টকাট) নেই”। যেকোন ক্ষেত্রেই উন্নতিলাভের জন্য একাগ্রমনে কাজটা করতে হবে। নিয়ম করে রোজ যোগাভ্যাস মানসিক নিয়মানুবর্তিতা লাভে সাহায্য করে এবং তা আমাদের রোজকার জীবনের একটা অঙ্গে পরিণত হ্য়। এর ফলস্বরূপ, আপনি আপনার কাজ, অভ্যাস ও জীবনযাত্রাতে স্পষ্ট পরিবর্তন দেখতে পাবেন। আপনি এই পরিবর্তনগুলির সঠিক মূল্যায়ণ করবেন ও নিজের জীবনে যোগের মত একটা ভালো অভ্যাসকে বেছে নেওয়ার জন্য নিজেকে কৃতজ্ঞতা জানাবেন।

এখানে কিছু নির্দেশ দেওয়া হল যা আপনাকে যোগাভ্যাসের একাগ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবেঃ

  • ঘুমানোর কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা আগে স্বল্প আহার গ্রহণ করবেন।

  • নিয়মিত একটা ঘুমের নির্ঘণ্ট মেনে চলা ও রোজ যাতে ৭/৮ ঘণ্টা ঘুম হয় সেটা দেখা।

  • অনেক রাত অবধি ইলেক্ট্রনিক জিনিস যেমন মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভি দেখা ঠিক নয়; কারণ এতে ঘুমের ব্যঘাত ঘটে।

  • একটা নির্দিষ্ট সময়ে ও নির্দিষ্ট স্থানে যোগাভ্যাস করতে হবে, স্থান নির্ধারণে ও সময়ের বিষয়ে আলস্য দেখানো ঠিক নয়।

দলের সাথে কাজঃ যোগাভ্যাসকে বন্ধ না করার জন্য বা তাকে আরও বেশী আকর্ষণীয় করার জন্য কোন দল বা বন্ধুদের সাথে একসাথে অভ্যাস করা যেতে পারে। এতে সবাই মিলে কাজটিকে যেমন আনন্দের সাথে করা যায় তেমনি এর উপকারিতাও একসঙ্গে লাভ করা যায়।