যখন তোমার শরীর তোমার সবচেয়ে বড় ঝুঁকির বিষয়
উনিশ বছর বয়সে মেয়েটি প্রথমবার একা বাইরে ঘুরতে বেরিয়েছিল। প্রথম গন্তব্যে সে বেশ নির্বিঘ্নেই পৌঁছেছিল। সমস্যা তখনই দেখা দিয়েছিল যখন মেয়েটি অটোস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ভাড়া করা অটোয় বসেছিল। তখন সে উপলব্ধি করেছিল যে একজন পুরুষ তার গায়ে হাত রেখেছে। মেয়েটা ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়ে নিজের বাঁদিকে সরে গিয়েছিল। লোকটাও একলাফে নিজের সীমা লঙ্ঘন করে এবং নানারকম ঘৃণ্য অঙ্গভঙ্গি করছিল। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল যে একদিনেই লোকটা এই কাজে দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেনি। এই ঘটনার পর মেয়েটি অসুস্থ বোধ করে। সে খুবই লজ্জিত ও অসহায় হয়ে পড়েছিল। এমনকী, মেয়েটা হিংস্রও হয়ে উঠেছিল। হাঁটাচলা করার ক্ষমতাই সে হারিয়ে ফেলেছিল।
বছরখানেক পর আরেকটা অসম্মানের অভিজ্ঞতা তার হয়েছিল। তখন সে উনিশ বছর পার করেছে। সেই সময়ে সে এমন একটা হাত দেখেছিল যে হাতটা তার শরীরের এমন কোনও জায়গা ছিল না যেখানে স্পর্শ করছিল না। পরে মেয়েটি অবাক হয়েছিল এই কথা ভেবে যে কেন সে ওই পরিস্থিতিতে অটো থেকে লাফিয়ে পড়েনি, লোকটার পিছনে ধাওয়া করে তাকে হেনস্থা করেনি। একবার তা করতে পারলেই নিজের দৈহিক কাঠামো বা অবয়বের সঙ্গে তার সম্পর্কের বদল
ঘটতে পারত।
রাস্তাঘাটে এইধরনের হেনস্থার ফলে মহিলারা প্রায়শই বিপদে পড়ে। এই ঘটনা নিয়ে অনেক রসালো গল্প বাজারে ছড়ায়, মেয়েদের আত্মরক্ষার কৌশল নিয়ে অনেক কিছু আলোচনা হয়। কিন্তু নিয়মিতভাবে এমন কোনও মহিলা নেই যার চিন্তায় নিজের অবয়ব বা দৈহিক গড়ন একপ্রকার মস্ত ঝুঁকির বিষয় হয়ে দাঁড়ায় না। কীভাবে দৈনন্দিন জীবনযাপন, প্রত্যাশার ক্ষেত্রে একজন মহিলার কাছে তার দৈহিক কাঠামো চিরতরে আর ভয়ের বা হুমকির কারণ হয়ে থাকবে না?
মনোরোগ সংক্রান্ত হাসপাতাল পিপ্ল ট্রি মার্গ-র মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সেক্সুয়াল এবং রিলেশনশিপ থেরাপিস্ট ডাক্তার সন্দীপ দেশপাণ্ডে বলেছেন, ''অল্পবয়সি মহিলারা রাস্তাঘাটে বেরিয়ে যখন হেনস্থার শিকার হয় তখন তাদের জন্য আমার খুব খারাপ লাগে। এই ঘটনায় তারা মানসিক উদ্বেগ এবং আতঙ্কের শিকার হয়ে পড়ে। রাস্তায় হেনস্থার জন্য আমার কয়েকজন রুগি তাদের কেরিয়ারের দিশা বদলে নিয়েছিল বা অন্য কেরিয়ার বেছে নিয়েছিল।'' তিনি আরও বলেছেন, ''যে সব মহিলাদের রাতের বেলায় কাজ করতে হয় তাদের কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে বা কাজের জায়গায় পুরুষদের থেকে অনেক বেশি সমস্যা বা বিপদের মুখোমুখি হতে হয়। আর এইজন্য প্রায়শই তাদের দৈহিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শেষমেশ তারা গভীর মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে পড়ে। নিজের সঙ্গীর সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একজন মহিলার উপর রাস্তায় ও কর্মক্ষেত্রে যে ধরনের হেনস্থা হয়ে থাকে তার কুপ্রভাব মহিলাদের সমগ্র পরিবারের উপর পড়ে।''
মহিলাদের উপর হওয়া হেনস্থার প্রভাব
একজন সাইকেলবিদ এবং দৌড়বিদ ও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান সেটলমেন্টস্ (আইআইএইচএস)-এ কর্মরত শ্যামলা সুরেশ তাঁর জীবনে রাস্তায় ঘটা এক হেনস্থার ঘটনার কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, ''তখন আমি ওই বিষয়ে এতটা সচেতন ছিলাম না, কিন্তু আমার মনে আছে যে সেই ঘটনার পরে আমি আমার পোশাকের ধরনে পরিবর্তন এনেছিলাম। আমি ঢিলেঢালা জামাকাপড় পরতে পছন্দ করতাম। ঘটনার পর এই বিষয়ে আমি অত্যন্ত সজাগ হয়ে যাই ও নজরদারি শুরু করি...আসলে রাস্তায় ঘটা হেনস্থাকে মেনে নেওয়া আমার পক্ষে মোটেই সহজ ছিল না।'' ঘটনা ঘটার সময়ে তার বয়স ছিল সম্ভবত দশ কি বারো। সে প্রতিদিন হেঁটে আঁকার ক্লাসে যেত। সঙ্গে আরও দু'জন বাচ্চা মেয়েও থাকত। হেনস্থার ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে সে জানায় যে একদিন তারা প্রায় ক্লাসে পৌঁছেই গিয়েছিল। তখন একজন লোক পিছন থেকে এসে তাকে খপ করে ধরে। সে বিষয়টা আঁচ করতে পেরেই পালিয়ে যায়। তারপরে তারা ছুটে ক্লাসে ঢুকে গিয়েছিল। এই ঘটনার অভিজ্ঞতা থেকেই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে সে একজন সাইকেলবিদ হবে এবং ভারোত্তলন করে নিজের শক্তি বাড়িয়ে তুলবে। কলেজে পড়ার সময়ে সে এবং তার দুই বন্ধু ঘটনাচক্রে এক খারাপ লোককে পায়ের তলায় পিষে দিয়েছিল যে নাকি চেষ্টা করছিল তাদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। ওই খারাপ লোকটার স্পর্শ থেকে বাঁচার জন্য তারা তাদের ব্যাগকে আত্মরক্ষার উপায় হিসেবে ব্যবহার করেছিল। কিন্তু তাদের মনে সবসময়ে একটা ভয় হত যে ওই লোকটা যেন কোনওভাবে সুযোগ না পায়। কারণ কেউ জানে না যে সে তাদের উপর আগামীকাল অ্যাসিড ছুড়ে মারবে না।
আরেকজন মহিলা যে ব্যাঙ্গালোরের সাইকেলবিদ হিসেবে পরিচিত তিনি হাঁটা অথবা অটো বা ট্যাক্সিতে চড়ার থেকে বাইক চালানোকেই বেশি প্রাধান্য দিতেন। একবার ওই মহিলা যখন সালোয়ার কামিজ পরে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন মোটর সাইকেলে চড়া একটা লোক তাঁর গায়ে সপাটে মেরে তড়িঘড়ি সেখানে থেকে পালিয়ে যায়। এই ঘটনাটা তাঁকে খুব নাড়া দিয়েছিল। তারপর থেকে মহিলা লিঙ্গ- নিরপেক্ষ পোশাকআশাক পরতেই বেশি পছন্দ করতেন। পুরো ঢাকা থাকে এমন যানবাহনে চড়তেন। স্কুলের বাচ্চা থেকে মধ্যবয়সি লোকজনের মনে আমায় দেখে একটাই প্রশ্ন আসত- আমি ছেলে না মেয়ে? মানুষের আচরণের উপর লিঙ্গবৈষম্যের প্রভাব স্পষ্টভাবেই পড়ে।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং স্টুডেন্ট কাউন্সেলর হিসেবে পরিচিত সোনম মনোজ যখন ইনর্টান হিসেবে কাজ করছিলেন তখন তাঁর কাছে একজন রুগি এসেছিল যে তার মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে খুবই মানসিক উদ্বেগে ভুগত। তার মনে হত যে কোনও পুরুষ মানুষের, তা সে আত্মীয় বা বাইরের লোক যে-ই হোক না কেন, তাদের উপস্থিতি তার মেয়ের জীবনে নিরাপদ নয়। ওই মহিলার মনে প্রত্যেকটি পুরুষ মানুষকে নিয়েই সন্দেহ দেখা দিত। এই তালিকায় তার স্বামী ও শ্বশুরও বাদ যেত না। দেড় বছর থেরাপি করার পর বোঝা যায় যে এই সমস্যাটা তার অল্প বয়সে ঘটা একটা হেনস্থার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। তাদের বাড়ির উল্টোদিকে একজন চা-বিক্রেতার দোকান ছিল। যখন মহিলার বয়স বারো বছর তখন চা-বিক্রেতার সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই লোকটাকে তার পরিবারের সদস্যরা বন্ধু বলে মনে করত। মহিলার সঙ্গে তার বাবার সম্পর্ক সেই সময়ে আন্তরিকতাহীন হয়ে পড়ে। দু'বছর তাদের মধ্যে বাক্যালাপই ছিল না। মহিলা ছোটবেলা থেকেই খুব স্বাধীনচেতা হয়ে বড় হয়েছিল, একা একা ঘুরে বেড়াত, অনেক শহরে একা একা থাকত এবং কাজ করত। কিন্তু শৈশবের সেই ঘটনার স্মৃতি তার মন থেকে কিছুতেই মুছত না। তাই বহু বছর পর যখন সে তার মেয়ের জীবনে কোনও পুরুষের উপস্থিতি লক্ষ করত তখন তার মনে অযৌক্তিক ভয়
দেখা দিত।
নিমহানস-এর সাইকিয়াট্রি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাক্তার প্রভা চন্দ্র-র মতে বারবার কারোর জীবনে হেনস্থা এবং আক্রমণ ঘটলে তার মধ্যে আতঙ্ক জন্মানোর ঝুঁকি দেখা দেয়। ডাক্তার চন্দ্র আরও বলেছেন যে, ''একটা জঘন্য ঘটনার জন্য মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। একজন মহিলার মধ্যে রাগ-ক্ষোভ জন্মায়। যখন তার জীবনে বারবার হেনস্থা ঘটে তখন তার প্রতি একপ্রকার সামাজিক প্রত্যাখ্যান দেখা দেয়। যদি একবার কোনও খারাপ ঘটনা ঘটে তখন সময়ের সঙ্গে তার প্রভাব ফিকে হওয়া সম্ভব, কিন্তু বারবার ঘটলে মানুষের মনে অসহায়তার বোধ জন্মায়। এমনকী, কোনও পুরুষ যদি একজন মহিলাকে অত্যন্ত সহজ-স্বাভাবিক চোখেও দেখে তাহলেও মহিলাদের মনে হতে পারে যে তারা যেন একপ্রকার ভোগের বস্তু। তাদের মধ্যে একেবারেই কোনও সুখের বোধ হয় না।''
তিনি এ-ও বলেছেন যে, এইধরনের হেনস্থা বারবার ঘটলে এবং মহিলাদের প্রতি সহযোগিতা ও সাহায্যের মনোভাব না থাকার ফলে তাদের মনে উদ্বেগ ও আতঙ্ক জন্মায়। পরিস্থিতি একদম চরমে পৌঁছলে মহিলারা একা বাইরে যেতেও ভয় পায়। তবে পৃথিবীর সব মহিলার ক্ষেত্রেই যে এই একই ঘটনা ঘটে তা নয়। ডাক্তার প্রভা চন্দ্র-র মতে, ''এমন অনেক মহিলা রয়েছে যারা তাদের মনের অসহায়তা দূর করতে সক্ষম হয়। তারা প্রকাশ্যে এসে সমস্যার মুখোমুখি দাঁড়াতে পারে, নিজের ইচ্ছেমতো দেরি করে নিজের বাড়িতে ফিরতে পারে, রাতে গাড়ি চালাতে পারে, বেশি রাতে দোকান-বাজারেও যেতে পারে। মহিলারা এসব কাজ যত বেশি করে করবে তত তাদের মধ্যে শক্তির উন্মেষ ঘটবে।''
খোলাখুলি নিজেদের সমস্যা আলোচনা করার জন্য তিনি মহিলাদের পরামর্শ দিয়েছেন। ''নিজেদের মনের ভয় ও অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া জরুরি। এটা ভাবা ঠিক নয় যে এই সমস্যা কেবলমাত্র একজন মহিলার ক্ষেত্রেই দেখা যায়। যে পুরুষ একজন মহিলাকে সম্মান দেখায় তার সঙ্গে অন্তত মহিলাদের উচিত নিজের অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া। পরিকল্পিতভাবে নিজের পরিচয় এবং দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার কথা তুলে ধরতে হবে। এর মাধ্যমে মহিলাদের মধ্যে শক্তিশালী হওয়ার একপ্রকার বোধ জাগে। নিজেদের ব্লগেও মহিলারা তাদের হেনস্থার ঘটনার বিবরণ তুলে ধরতে পারে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বিপজ্জনক স্থানের কথা প্রচার করার জরুরি। আর বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য পুলিশের সাহায্য নেওয়া একান্ত আবশ্যক''।– এমনই মত ডাক্তার প্রভা চন্দ্র-র।
সাঁতার-প্রশিক্ষক, নৃত্যশিল্পী এবং মুভমেন্ট থেরাপিস্ট হিসেবে খ্যাত প্রিয়াংকা পাই- এর মতে, ''এগুলো দৈনন্দিন জীবনের গ্লানি দূর করতেও সাহায্য করে। এটা মনে করার কোনও কারণ নেই যে এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব পদ্ধতির কার্যকারিতা সফলতা পাবে। এগুলোকে নিজের বাড়ির সিঁড়ি হিসেবে অর্থাৎ লক্ষ্যে পৌঁছানোর ছোট ছোট ধাপ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।'' তিনি এমন একটা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন যেখানে বাস্তব ক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তা দানের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। সেখানে মহিলাদের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র যেমন- মাথার কাঁটা, ছাতা এবং চাবি নিরাপত্তার অস্ত্র হিসেবে তাদের সঙ্গে রাখার কথা বলা হয়েছিল। ''মনে রাখতে হবে আই্টি, বিজ্ঞান বা অন্যান্য পেশাদারি বিষয়ের মতোই মহিলাদের উপর আক্রমণও খুব পেশাদারি কায়দায় হয়। আক্রমণকারী পুরোপুরি পরিকল্পনা করে আসরে নামে। তাই যার উপর আক্রমণ করা হচ্ছে তাকে সেই আক্রমণ প্রতিহত করার কৌশল ভালোভাবে রপ্ত করা একান্ত প্রয়োজন। নিজের শরীরকে সেইভাবেই প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বিপদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য পালানোর কায়দা শিখতে হবে।''- এমনই বলেছেন প্রিয়াংকা। এছাড়াও মহিলাদের প্রতি তাঁর পরামর্শ হল- নিজেদের ফোনের চার্জ সম্পূর্ণ রাখতে হবে এবং নিদেনপক্ষে পাঁচজন কাছের মানুষের সাহায্য নেওয়ার জন্য তাদের পুরো ঘটনা জানাতে হবে।
'Why Loiter?' (লেখক- শমীরা খান, শিল্পা ফাড়কে এবং শিল্পা রানাডে)- নামক বইয়ে বর্ণনা করা হয়েছে কীভাবে জনসমক্ষে মহিলারা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে, বিশেষত তারা যেন উপভোগ করার একপ্রকার মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। এই বই লেখার পিছনে নিজেদের উদ্দেশ্যের কথা বলতে গিয়ে শমীরা বলেছেন যে ঘরে-বাইরে, শহরে-প্রান্তরে পুরুষের মতো সমানাধিকার, সম-নাগরিকত্ব এবং কাজের জগতে মহিলাদের যথাযথ সম্মান ও সম্ভ্রম বজায় রাখার পক্ষপাতি তারা। বাইরের জগৎ থেকে মুখ লুকানো মহিলাদের ক্ষেত্রে একদমই উচিত নয়। বরং এক্ষেত্রে তাদের এগিয়ে আসতে উৎসাহী হয়ে ওঠা জরুরি। এখন মহিলাদের তরফ থেকে নিজের শহরকে একান্ত নিজস্বভাবে দাবি করার সময় এসে গিয়েছে।
অনেক মহিলা এখনও যে কোনও কারণে নিজেদের কলঙ্ক জাহির করতে, ভিন্নধর্মী পোশাক পরে বা জনসমক্ষ থেকে নিজেদের অস্তিত্ব মুছে ফেলার জন্য মুখিয়ে থাকে। যদি তারা এসব কাজ খুব সহজেই করে ফেলে তাহলে সমাজের চোখে নিজেদের মেয়ে হয়ে জন্মানোর বাস্তব প্রমাণগুলো তারা নিজেরাই অত্যন্ত প্রকট করে তুলবে। তখন সমাজ আর তাদের 'মানুষ' হিসেবে বিবেচনা করার তাগিদ দেখায় না। সমাজের মূলস্রোত থেকে তারা একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যদি মহিলাদের মধ্যে এহেন মানসিকতার পরিবর্তন ঘটে তাহলেই কিন্তু দৈনন্দিন জীবনযাপনের ক্ষেত্রে তারা 'মেয়ে' ও 'মহিলা' হিসেবে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে পারবে।