বর্ণনা: মনোহর কল্পনা করতে শুরু করলেন এবং স্ত্রীকে তা বিশ্বাস করার কথা বোঝাতে চাইলেন

বর্ণনা: মনোহর কল্পনা করতে শুরু করলেন এবং স্ত্রীকে তা বিশ্বাস করার কথা বোঝাতে চাইলেন

মেডিকেশন ও থেরাপির সাহায্যে ছোটখাটো বা সাময়িক মানসিক সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব

অবসরপ্রাপ্ত দম্পতি মনোহর ও মীনাক্ষি (নাম পরিবর্তিত) একমাত্র পুত্র ও পুত্রবধূর সঙ্গে ব্যাঙ্গালোরে থাকেন। মনোহর পুত্র অন্তপ্রাণ। অবসর জীবনে তিনি স্ত্রীকে রান্নাঘরে সাহায্য করেন, আর্থিক বিষয়টি দেখেন, প্রয়োজনীয় খরচ নিজে সামলান। সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে নিয়েছেন, যাতে পুত্র ও পুত্রবধূ নিজেদের পেশায় মনোনিবেশ করতে পারে। বৃদ্ধ দম্পতির আনন্দের বাঁধ ভাঙল যখন তাঁরা একটি ফুটফুটে কন্যার দাদু-ঠাকুমা হলেন। তখন নাতনিই হল তাঁদের সমস্ত আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।

এভাবেই চলছিল, হঠাৎ একদিন ছেলে জানাল যে, সে একটা দীর্ঘমেয়াদি অ্যাসাইনমেন্ট পেয়েছে। স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে ইংল্যান্ড চলে যাবে। ছেলে সপরিবারে ইংল্যান্ড চলে যাওয়ার পর কিছুদিন স্বামী-স্ত্রীর মনখারাপ হয়ে রইল।

মীনাক্ষি মর্মাহত হয়েও নিজেকে কোনভাবে সামলে স্বাভাবিক জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নিলেন। কিন্তু মনোহর আবেগের বশে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেন। কয়েক সপ্তাহ পর মীনাক্ষি মনোহরের আচরণে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করলেন। বাড়িতে লোকজন এলে তিনি তাদের সঙ্গে বিশেষ কথাবার্তা বলছেন না, এড়িয়ে চলছেন। ঘন্টার পর ঘন্টা একটা জায়গায় বসে থাকছেন। চিন্তাশক্তি লোপ পাচ্ছে। ঘুমের সমস্যাও দেখা যাচ্ছে। একদিন তিনি স্ত্রীকে বললেন, প্রতিবেশীরা তাঁদের নিয়ে নানা রকম আলোচনা ও ষড়যন্ত্র করছে। তিনি এই ধরনের কাল্পনিক বিষয় সত্যি বলেই স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন। এমনকী দুই প্রতিবেশীর বাড়ি গিয়ে তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে বারণ করলেন।     

মীনাক্ষি স্বামীর ভ্রান্ত ধারণার জন্য হতাশ হয়ে একদিন মনোহর যখন এক প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝামেলায় মত্ত, তখন সিদ্ধান্ত নিলেন স্বামীকে পারিবারিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন। চিকিৎসককে মীনাক্ষি জানালেন, ছেলে চলে যাওয়ার পরই স্বামীর ব্যবহারে পরিবর্তন দেখা দেয় এবং যেটা তাঁর কাছে ক্রমশ মানসিক বিড়ম্বনা ও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চিকিৎসক পুরো ঘটনাটা শুনে তাঁদের পছন্দ মতো একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করতে বললেন। মানসিক অবস্থা মূল্যায়ন করে নিশ্চিত হওয়া গেল যে, মনোহর সাময়িক বা ছোটখাটো মানসিক অবস্থার শিকার। থেরাপি ও মেডিকেশনের যৌথ প্রয়োগে তিনি অসুস্থতা কাটিয়ে উঠলেন। ভবিষ্যতে এই লক্ষণগুলি আর দেখা যায়নি।

উপরের ঘটনাটি রোগীদের লক্ষণ ও সামাজিক বিষয়কে ভিত্তি করে মানসিক বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণের নিরিখে তৈরি। এটি কোন ব্যক্তিবিশেষের কাহিনি নয়। উল্লেখ্য, অসুস্থতায় ভুক্তভোগী যে কোন মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। 

Related Stories

No stories found.
logo
হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন
bengali.whiteswanfoundation.org