ইন্টেলেকচুয়াল ডিসেবিলিটি বা বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা: ভুল ধারণা এবং বাস্তব
ভুল ধারণা: বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা বংশগত সমস্যা।
বাস্তব: বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা সব ক্ষেত্রে বংশানুক্রমিক হয় না। অনেক ক্ষেত্রে বাহ্যিক কারণে বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা হতে পারে, সময় থাকতে যার নিবারণ সম্ভব।
ভুল ধারণা: বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা ছোঁয়াচে।
বাস্তব: এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা কারণ বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা কোন রকমের শারীরিক সংস্পর্শে ছড়ায় না।
ভুল ধারণা: বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধী শিশুদের শাসন করার সময় কাঁদানো উচিৎ নয়।
বাস্তব: সব শিশুদের মতই বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধী শিশুদেরও ভদ্র আচরণ শেখানো উচিৎ। যদিও শাসন করার সময় তাঁদের পরিস্থিতির সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করা উচিৎ।
ভুল ধারণা: বিবাহ বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা সারিয়ে তোলে।
বাস্তব: এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধী কোন ব্যক্তির বিবাহের পূর্বে ভাবী স্বামী বা স্ত্রী-কে প্রতিবন্ধকতার কথা পুরোপুরি জানিয়ে দেওয়া উচিৎ।
ভুল ধারণা: ওষুধ এবং ভিটামিনের সেবনে বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা সেরে যায়।
বাস্তব: বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা যদি এমন কোন কারণে হয় যা চিকিৎসার সাহায্যে সারিয়ে তোলা যায়, তাহলে ওষুধের সেবনে অবশ্যই নিরাময় সম্ভব। কিন্তু প্রতিবন্ধকতা যদি মস্তিষ্কের ক্ষয়ক্ষতির জন্য হয়ে থাকে তাহলে কোন টনিকের সেবনে সুফল পাওয়া যাবে না।
ভুল ধারণা: প্রাপ্তবয়স্ক বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধীদের দ্বারা আশেপাশের মানুষের ওপর যৌন উৎপীড়নের ভয় সব সময় লেগে থাকে যেহেতু তাঁদের নিজেদের যৌন তাড়নার ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
বাস্তব: প্রাপ্তবয়স্ক বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধীর যৌন তাড়না সংকুচিত হয়।
ভুল ধারণা: বাবা মায়ের আগের জন্মের পাপ বা দুর্ভাগ্যের ফলে বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা হয়।
বাস্তব: এই ধরনের সামাজিক মিথ্যাচার বাবা-মাকে আরো ভারাক্রান্ত করে তোলে। বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা এক ধরনের ব্যাধি এবং এতে আক্রান্ত রোগীর বাবা-মা এবং পরিচর্যাকারীর তাঁদের পরিচিত মহলের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়। অপরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ হওয়া সত্ত্বেও পারিবারিক এবং সামাজিক সহযোগিতা আর অনুপ্রেরণার সাহায্যে বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধীরা সক্ষম এবং আত্মনির্ভর হয়ে উঠেতে পারে।
ভুল ধারণা: তন্ত্র-মন্ত্র বা বশীকরণে বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা সেরে যায়।
বাস্তব: এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচার। জাদু, টোটকা, পুজো বা বশীকরণের নাম করে ভণ্ড লোকেরা বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধীদের বাবা-মায়েদের মিথ্যে আশ্বাস দেন যে এইসব করে বুদ্ধিগত প্রতিবন্ধকতা সারিয়ে তোলে সম্ভব। এর কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গবেষণা করে দেখা গিয়েছে এই ধরনের প্রচারের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
এই তালিকা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউ এইচ ও) দ্বারা মানসিক প্রতিবন্ধকতার ওপর প্রকাশিত ডকুমেন্টের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। মূল লেখনীটি লিখেছেন নিমহান্স, বেঙ্গালুরুর, ডঃ সতিশ গিরিমাজি, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের ডঃ সুলতানা এস জমান, শুষিতা সুওয়াসেঠা প্যারেন্ট্স অ্যাসোসিয়েশন, শ্রীলঙ্কা-র পি এম ভিজেতুঙ্গা এবং রাজানুকাল হসপিটাল ব্যাঙ্ককের ডঃ উদোম পেজারাসাঙ্ঘার্ন।