পড়াশুনা নিয়ে এত ব্যস্ত যে খেলার সময় নেই
এমন অদ্ভুত নিয়মের জন্য জ্যাক নামের একটি বাচ্চা ছেলে একেবারে ভোঁতা হয়ে গিয়েছিল। ইংরেজির এই প্রবাদ, “অল ওয়ার্ক অ্যান্ড নো প্লে”, আমাদের কাছে সত্যিই একটি শিক্ষণীয় বিষয়। নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্য দিয়ে মানুষের শরীর এবং মন, দুই-ই ভালো থাকে। এই শিক্ষাটা তখন আমাদের কাছে আরও বেশি গুরুত্ব পায়, যখন কোনও পরীক্ষা আমাদের দরজায় এসে কড়া নাড়ে। কারণ পরীক্ষার সময়ে আমরা কায়িক পরিশ্রমের পরিবর্তে সারাক্ষণ বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকি।
''শরীরচর্চা বা ব্যায়াম আমার জন্য নয়''
আমরা সাধারণভাবে দেখি যে, শরীরচর্চা এমন একটি কঠোর কায়িক পরিশ্রম, যার ফলে মানুষ ঘেমে-নেয়ে একেবারে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু প্রকৃত শরীরচর্চা বলতে এভাবে মানুষের পরিশ্রান্ত হওয়াকে বোঝায় না। নিজেকে সুস্থ-সবল এবং সক্ষম রাখতে মানুষ সাঁতার কাটে, সাইকেল চালায় বা নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করে। যদি প্রতিদিন এইসব কাজ করতে মানুষের একঘেয়ে লাগে, তাহলে এর পরিবর্তে নাচ অথবা খেলাধূলা করা যেতে পারে। দৈনন্দিন জীবনে নিজেকে সক্রিয় বা সচল রাখার জন্য মানুষের উচিত কতগুলি অভ্যাস রপ্ত করা—
বেশ কিছুক্ষণ হাঁটা বা সাইকেল চালানো
চলন্ত সিঁড়ির বদলে পায়ে হেঁটে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করা
সপ্তাহের শেষে নিজেকে ঘরবন্দি না রেখে বাইরের নানা কাজে ব্যস্ত রাখা
''কিন্তু পড়াশুনার খুব চাপ। তাই আমার হাতে একটুও সময় নেই।''
পরীক্ষা এগিয়ে এলেই আমাদের কাছে সময় খুব দামি এবং মুখ্য বিষয় হয়ে ওঠে। কিন্তু শত ব্যস্ততার মধ্যেও যদি অল্প সময়ের জন্য আমরা শরীরচর্চা করতে পারি, তাহলে তা আমাদের দ্বারা সময়ের সদ্ব্যবহারই করা হবে। শরীরচর্চা বা ব্যায়াম তাহলে তা আমাদের দ্বারা সময়ের সদ্ব্যবহারই করা হবে। শরীরচর্চা আমাদের এমনভাবে সতেজ ও কর্মক্ষম করে তোলে যে, এর ফলে আমাদের দক্ষতা এবং সৃষ্টিশীলতা বেড়ে যায়। মনকে শান্ত ও চাপমুক্ত রাখার ক্ষেত্রেও শরীরচর্চা একান্ত উপযোগী। এমন কিছু ব্যায়াম আছে যা সকালবেলায় করলে সারাদিন চনমনে
থাকা যায়।
''আমার বাবা-মা চায় যে আমি সারাক্ষণ বাড়িতে থাকি আর পড়াশুনা করি''
ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষার সময়ে বাবা-মায়েদের চিন্তা খুব বেড়ে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে চিন্তার কোনও সীমা-পরিসীমা থাকে না। এই সমস্যা কাটানোর জন্য তাদের উচিত অল্প হাঁটাহাঁটি করা এবং হালকাভাবে দৌড়ানো বা জগিং করা। বাবা-মায়ের শরীরচর্চার জন্য ছেলে-মেয়েকেই সঙ্গ দিতে হবে। আর এর মধ্য দিয়েই তারা বুঝতে পারবে যে, পরীক্ষার সময়ে তাদের ছেলে বা মেয়ে অযথা সময় নষ্ট করছে না। শুধু তাই নয়, মাকে নিয়ে বাজারে যেতে হবে এবং এই সময়ে মায়ের সঙ্গে শরীরচর্চার উপকারিতা নিয়ে কথাবার্তাও বলা প্রয়োজন। এইভাবে পরিকল্পনামাফিক চললে পরীক্ষার সময়েও নিয়মিত শরীরচর্চা করার জন্য নির্দিষ্ট সময় বার করা
সম্ভবপর হয়।