কীভাবে ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে কথোপকথন শুরু করা উচিৎ

কীভাবে ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে কথোপকথন শুরু করা উচিৎ

উপযুক্ত সময় নিয়ে একটি ক্লাসের মেজাজ-মর্জি বা মতিগতি বোঝা সবার আগে দরকার। এক্ষেত্রে যদি কোনও ছাত্রের আচরণে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়, তাহলে তা ভালোভাবে নজরে রাখতে হবে। আর যদি এহেন আচরণ দীর্ঘস্থায়ী না হয় বা শুধুমাত্র কিছুক্ষণ হই-হুল্লোড়ের জন্য করা হয়ে থাকে, তাহলে তা তত গুরুতর নয়। এই বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য কোনও সহকর্মীর সঙ্গে আলোচনা করা জরুরি এবং অন্যান্য ক্লাসে এমন ঘটনার প্রমাণ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে একজন শিক্ষককে নিশ্চিত হতে হবে। সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলার সময় একজন শিক্ষকের ইচ্ছাশক্তি ব্যবহার করা প্রয়োজন। এর উদ্দেশ্য ছাত্রদের সাহায্য করা, তাদের সম্পর্কে কোনও গুজব ছড়ানো নয়।

যদি দেখা যায় যে, কোনও ছাত্রের এহেন আচরণ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, তাহলে শিক্ষকের উচিত সেই ছাত্রকে নিজের কাছে ডেকে তার সঙ্গে গল্পের ছলে কতগুলি বিষয় পরিষ্কার করা। যেমন—

  • সাধারণ কথাবার্তার মধ্য দিয়ে কিছু প্রশ্ন সেই ছাত্রকে করতে হবে— ছাত্রটি ইদানীং কী করছে, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া, বা ছাত্রটি এখন ঠিক কী ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে এবং সেই পরিস্থিতিটি ছাত্রটির কাছে যে খুব সুখকর নয় তা শিক্ষক লক্ষ্য করেছেন, সে কথা ছাত্রকে জানানো প্রভৃতি।

  • ছাত্রদের দোষী হিসেবে চিহ্নিত করা থেকে শিক্ষককে বিরত থাকতে হবে। বিশেষত, সিদ্ধান্তবাচক কোনও বাক্য বা আচরণ করা ঠিক নয়। যেমন— ছাত্রদের কখনই অবসাদগ্রস্ত বলে মনে করা উচিত নয় বা এই বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনও আলোচন করা কাম্য নয়।

  • শিক্ষককে ভালো শ্রোতা হতে হবে। একজন ছাত্র তার শিক্ষকের কাছে যা কিছু বলছে, তা শিক্ষককে গোপন রাখতে হবে। এক্ষেত্রে একজন শিক্ষক তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা সেই ছাত্রের সামনে তুলে ধরে ছাত্রকে তথ্যের আদান-প্রদানজনিত যথাযথ পদ্ধতি শেখাবেন— এমনটাই যুক্তিযুক্ত। ছাত্রদের দোষী হিসেবে চিহ্নিত করা বা ছাত্রদের বিষয়ে কোনও নেতিবাচক মতামত দেওয়া একজন শিক্ষকের কাছ থেকে একেবারেই আশা করা যায় না। কিছু ক্ষেত্রে এমনও হতে পারে যে, কোনও ছাত্র হয়তো শিক্ষকের কাছে সহজ হয়ে সব কথা বলতে পারছে না বা বলতে অস্বীকার করছে। সেক্ষেত্রে ওই ছাত্রকে একা থাকতে দিতে হবে এবং তার সঙ্গে পরবর্তী আলোচনার আগে কিছু সপ্তাহ শান্তভাবে তার উপর নজর রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, একজন ছাত্রের উপর জোর খাটিয়ে কোনও শিক্ষকই ছাত্রের সমস্যার সমাধান করতে পারবেন না। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকের উচিত একাধিকবার ছাত্রের সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করা। যদি দ্বিতীয়বারও শিক্ষক ব্যর্থ হন তাহলে স্কুলের কাউন্সেলরের সাহায্য নিয়ে সেই ছাত্রের সমস্যা সমাধানের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া একজন প্রকৃত শিক্ষকের কর্তব্য।

logo
হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন
bengali.whiteswanfoundation.org