মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা আইন ২০১৭-র বিশ্লেষণ
সম্প্রতি মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা আইন সংসদের উভয় কক্ষে পাশ হওয়ার পরে সরকারি গেজেটে নথিবদ্ধ হয়েছে। এই আইনে মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসায় বদল আনা এবং আমাদের দেশের এই সংক্রান্ত আইনের সঙ্গে ইউনাইটেড নেশন কনভেনশন অন দ্য রাইটস্ অফ পার্সনস্ উইথ ডিসএবিলিটিজ্ (ইউএনসিআরপিডি) আইনের সাজুয্য নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই আইন অনেক সর্বাঙ্গীন এবং এই আইন প্রয়োগ করার জন্য নতুন কর্তৃপক্ষ এবং নিয়মাবলী রচনা করা হয়েছে। এই নতুন আইন পুরোপুরি চালু হতে কিছুদিন সময় লাগবে এবং এর কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য যথাযথ আর্থিক বরাদ্দও অনুমোদন করা হয়েছে। এসব কারণে এই আইনের ফলাফল হয়তো এখনই আমরা ভোগ করতে পারব না। তবে এই আইনের খসড়া দেখে আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন হতে পারব এবং এই বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপও করতে পারব।
আইনের ইতিবাচক দিক
এই আইনের অর্ন্তভুক্ত চ্যাপ্টার ফাইভ-এ বলা হয়েছে যে সব মানুষেরই মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষার অধিকার রয়েছে এবং সরকারের পক্ষে মানসিক স্বাস্থ্যের পরিষেবা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা একান্ত জরুরি। এর মানে হল প্রয়োজনে আপনি আপনার এলাকায় অবস্থিত সরকারি মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার দ্বারস্থ হতে পারবেন (অথবা যদি কারোর নিজের বসবাসের এলাকায় এই পরিষেবার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সে তার পাশের বা প্রতিবেশি এলাকা থেকে এই পরিষেবা গ্রহণের সুযোগ পাবে) এবং সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ লাভ করবেন। এই চিকিৎসার ধরনও হবে ব্যাপক এবং শুধুমাত্র ওষুধ ও অ্যালোপ্যাথিক ব্যবস্থায় চিকিৎসা হবে না। তবে এই বিষয়ের সহজলভ্যতা অনেকাংশে সরকারি নীতি ও অর্থ বরাদ্দের উপর নির্ভরশীল। তাই আমাদের এটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে যে সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এর বিকল্প হিসেবেই বা কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, যেমন-
রুগির আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী সাধ্যমতো চিকিৎসার ব্যবস্থা করা
ভালো মানের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া
পর্যাপ্ত পরিমানে চিকিৎসার সুযোগ
রুগির হাতের নাগালে অর্থাৎ তার বাড়ির কাছেপিঠে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। যাতে তাকে চিকিৎসার জন্য দূরে কোথাও যেতে না হয় বা রুগিকে যদি দূরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয় তাহলে তার ক্ষতিপূরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে
ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, যৌন অভিমুখ, সংস্কৃতি, সামাজিক বা রাজনৈতিক বিশ্বাস, শ্রেণী, অক্ষমতা নির্বিশেষে সবার জন্য সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করা
এমন ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে যা মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি, তার পরিবার এবং পরিচর্যাকারীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। সেই সঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থার গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষার বিষয়টাও মাথায় রাখা জরুরি।
এই আইনে একজন রুগি তার বাড়িতে যে ধরনের সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক (সাইকোসোশ্যাল) সমস্যার মুখোমুখি হয়, সেদিকেও গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। যদি কাউকে তার সাইকোসোশ্যাল অক্ষমতার জন্য নিজের বাড়ির থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে এই আইনের সাহায্য নিয়ে তাকে সবরকম সহায়তা দান করা হবে, এমনকী নিজের বাড়িতে বসবাসের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে তাকে আইনি সহায়তাও দেওয়া হবে। এই বিষয়ক নীতি প্রয়োগের জন্য আইনের ১৯ নম্বর ধারায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, কিন্তু তার জন্য দরকার পড়বে স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেটের হস্তক্ষেপ।
এই আইনের দুর্বল দিক
এই আইনে একজনের মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসার ক্ষেত্রে দু'ভাবে সাহায্য করার কথা বলা হয়েছে-
আইনের চ্যাপ্টার ৩-এ উন্নতমানের নির্দেশ অনুযায়ী বলা হয়েছে মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসাকালীন সময়ে মানুষের চাহিদা অনুসারে পরিষেবা দেওয়া যাবে। আবার এমন কিছু নির্দিষ্ট চিকিৎসার কথাও নির্দেশ করা হয়েছে যা কেউ না চাইলেও করতে হবে।
আইনের চ্যাপ্টার ৪ অনুসারে রুগি এমন একজন প্রতিনিধি রাখতে পারবে যে ডাক্তার যদি চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন তাহলে রুগির হয়ে ওই প্রতিনিধি নিজে থেকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
তবে দুর্ভাগ্যবশত, এই দুটো নিয়মের মধ্যে কোনওটাই চরম নয়। এগুলো প্রয়োগের ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা বোর্ডের নজরদারি একান্ত জরুরি। এছাড়াও উন্নতমানের নির্দেশ বিপদকালীন চিকিৎসার ক্ষেত্রে একেবারেই প্রয়োগ করা যাবে না। নীচে এমন কতগুলো রক্ষাকবচের কথা বলা হয়েছে যার সাহায্যে রুগি চরম বিপদকালে যথাযথ ব্যবস্থা অবলম্বন করে নিজের সুস্থ থাকাকে সুনিশ্চিত করতে পারে-
উন্নতমানের নির্দেশ কার্যকর করতে এবং প্রতিনিধি নিয়োগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করা প্রয়োজন। যদি কেউ নিয়মিত স্বাস্থ্যসুরক্ষার দাবিদার হন তাহলে যারা চিকিৎসা পরিষেবা দান করছেন তাদেরকে উন্নতমানের নির্দেশ ও আপনার মনোনীত প্রতিনিধির বিষয়ে আগে থাকে জানাতে হবে।
উন্নত নির্দেশমূলক কাগজে নিজে সই করে তা মনোনীত প্রতিনিধির কাছে দিয়ে রাখতে হবে। কারণ এটা দিতে না পারলে মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞের কাছে ওই কাগজ মূল্যহীন বলে ধরে নেওয়া হবে।
আশ্বস্ত করতে হবে যে আইনে বর্ণিত তাদের অধিকার সম্পর্কে তারা ভালোভাবে ওয়াকিবহাল। এবং কোনওভাবে যদি আইন ভাঙার চেষ্টা করা হয় তাহলে মেন্টাল হেলথ্ বোর্ড কীভাবে তা প্রতিরোধ করবে সেই বিষয়েও তাদের জ্ঞান রয়েছে।
আইনের ৮৯ এবং ৯০ ধারা অনুযায়ী এই আইন এখনও অনিচ্ছাকৃত প্রাতিষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে, যদি-
আপনি সম্প্রতি কোনও হুমকির বা নিজেকে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার কোনও পদক্ষেপের সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
আপনি সম্প্রতি অন্যের প্রতি মারমুখী হয়ে ওঠেন বা আপনার কাছে থেকে অন্য কারোর যদি শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য ভয়ের কারণ থেকে থাকে
আপনি যদি নিজের যত্ন নিতে অসমর্থ হন এবং তার ফলে যদি আপনার নিজের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
একজন বিশেষজ্ঞের উচিত রুগির যত্নের ব্যাপারে এই সম্ভাব্য বিধিনিধেষগুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া এবং অন্য কোনও উপায় না থাকলে তবেই উন্নতমানের নির্দেশ প্রয়োগের কথা চিন্তা করা। সবশেষে, একজনের মানসিক হাসপাতালে ভর্তির কথা তখনই অগ্রাধিকার পাবে যখন দেখা যাবে যে সে তার নিজের যত্নের ক্ষেত্রে একেবারেই অক্ষম এবং চিকিৎসার জন্য অন্য কারোর উপর নির্ভরশীল। কারণ একদিকে সে যেমন নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে পারছে না এবং অন্যদিকে চিকিৎসার সিদ্ধান্তও সে স্বাধীনভাবে নিতে পারছে না। এক্ষেত্রে নিজের মনোনীত প্রতিনিধির কাছে থেকে তাকে সাহায্য নিতে হচ্ছে। এই ধরনের অনিচ্ছাকৃত ভর্তির মেয়াদ ৩০দিন পর্যন্ত হতে পারে। যদি কোনও কারণে এই সময়সীমা বাড়ানোর দরকার হয় তাহলে বোর্ডের মতামত একান্ত প্রয়োজনীয়।
বোর্ডের নির্দেশ অনুযায়ী যদি কোনও ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা হয় তাহলে চিকিৎসার শেষে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা আইনের ৯৮ নং ধারায় বলা আছে। এটা কোনও বাধ্যতামূলক পর্যায় নয়। এটা ঐচ্ছিক বিষয়। কারণ যে মানুষটা দীর্ঘ সময় ধরে একটা প্রাতিষ্ঠানিক যত্নশীলতার মধ্যে রয়েছে সেখানে তাকে সেই প্রতিষ্ঠান থেকে চলে যেতে বলার জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যায় না। অথবা এই বিষয়ে কোনও প্রতিশ্রুতিমূলক আইনও প্রনয়ন করা সম্ভব নয়। যদি এই বিষয়টাকে আইনের রূপ দেওয়ার চেষ্টা থাকে তাহলে দীর্ঘমেয়াদি ভর্তির ক্ষেত্রে সময়সীমা প্রতিবার ১৮০দিন ধার্য করা জরুরি।
মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষার অধিকারভঙ্গের বিষয়টাও এই আইনে জায়গা করে নিয়েছে। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যক্তিগতভাবে রিপোর্ট জমা পড়ে। এবং এই বিষয়ে হাসপাতালের কর্মী ও মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষের মধ্যে যে গুরুতর ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা রয়েছে তা তেমন স্বীকৃতি পায় না। আইনের ২৭ নং ধারায় সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অক্ষমতার শিকার কোনও ব্যক্তির আইনি সহায়তার কথা বলা রয়েছে। কিন্তু সেখানে তাদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে কোনও উকিলের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়নি।
যখন আপনি মানসিক অসুখের চিকিৎসার জন্য কোনও 'মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠান'-এর দ্বারস্থ হওয়ার কথা চিন্তা করবেন তখন এই আইনে সে সম্পর্কেও কিছু ধারা লিপিবদ্ধ হয়েছে। সেই সব প্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞা কম-বেশি একরকম এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলো সাইকোসোশ্যালভাবে অক্ষম মানুষদের যত্ন, চিকিৎসা, সুযোগ- সুবিধা এবং পুর্নবাসনের জন্যই গড়ে উঠেছে। এই আইনের অর্ন্তগত চ্যাপ্টার ১০-এ এগুলোর জন্য ছাড়পত্রের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয়েছে। এবং ছাড়পত্র ছাড়া কেউ যদি মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চায় তাহলে আইনের ১০৭ নং ধারায় তার শাস্তিস্বরূপ জরিমানার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। তাই গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হিসেবে কাউকে বাড়িতে রেখে, চিলড্রেনস্ হোম, বয়স্ক নাগরিকদের জন্য সেবা প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি জায়গায় মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। কারণ মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার জন্য চাই ছাড়পত্র। এই আইনের ১০৪ নং ধারা অনুযায়ী কোনও মানুষের যদি মানসিক অসুস্থতা দেখা দেয় তাহলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে সরকার-পরিচালিত মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত করার সুযোগও এই আইনে বলবৎ করা হয়েছে।
আইনের উদ্বেগের দিক
মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা ও অক্ষম ব্যক্তির চিহ্নিতকরণ- এই দুই উদ্দেশ্যেই পার্সনস্ উইথ ডিসএবিলিটিজ্ আইন, ২০১৬ গড়ে তোলা হয়েছিল। পিডব্লিউডিএ-তে অনেক প্রতিবন্ধকতাহীন নিয়মকানুন ছিল যাতে কোনওভাবেই দুর্বলতার চিহ্ন ছিল না এবং যার সঙ্গে অন্য আইনের কোনও বিরোধও ছিল না। অপরদিকে মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা আইনের ১২০ নং ধারা অনুযায়ী এই আইনের সঙ্গে অন্য আইনের কোনও ধারার বিরোধ দেখা দিলে এই আইনের প্রভাবই বেশি শক্তিশালী হিসেবে বিবেচিত হবে। এবং এই দুই আইনের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা আইনই জয়যুক্ত হবে।
এই আইনের প্রভাব থেকে 'বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় মানসিক অসুস্থতার কারণে অপরিপূর্ণ মন'-এর যে যুক্তি গ্রাহ্য রয়েছে, সেই ঘোষণাও বাদ যায়নি। যদি বিবাহবিচ্ছেদের আইনি প্রক্রিয়ায় এই ধরনের কোনও যুক্তির সম্মুখীন হতে হয় তাহলে আদালত মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা আইনের ১০৫ নং ধারা অনুযায়ী স্বাস্থ্য বোর্ডের কাছ থেকে মানসিক অসুস্থতাজনিত সবরকম প্রমাণ বা নথি চাইতে পারে। অন্যদিকে দুটো ভিন্ন আইনের ধারা পাশাপাশি চলার ফলে আইনি প্রক্রিয়ায় ক্ষেত্রে তা অসুবিধার সৃষ্টিও করতে পারে।
১৯৮৭ সালের আইন অনুযায়ী মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসার অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটই ছিলেন সর্বোচ্চ বিচারক। কিন্তু এই ক্ষমতা এখন মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা বোর্ডের হাতে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে মামলার বিচারের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি গ্রাহ্য করা হয়। কারণ মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা বোর্ডের পক্ষে দেশের প্রতিটি জেলায়, প্রত্যেক অঞ্চলে (যেমন- উত্তর-পূর্ব অঞ্চল) উপস্থিত থাকা প্রয়োজনীয় বিষয় বলে বিবেচ্য হয় না। মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি বা তার মনোনীত প্রতিনিধির পক্ষে বোর্ডের সঙ্গে যাতায়াত করা অসুবিধাজনক হতে পারে। সাইকোসোশ্যাল অক্ষমতার ক্ষেত্রে একজন মানুষ ততদিন একটা মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠানে অপেক্ষা করবে যতদিন না বোর্ড তাদের আবেদন গ্রাহ্য করছে।
যদি বোর্ড দেখে যে একজন রুগির আর মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসালয়ে থাকার দরকার নেই তাহলে এই আইন মোতাবেক ওই ব্যক্তি মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসালয়ে স্বাধীন রুগি হিসেবে থাকতে পারে। কিন্তু কতদিন সে এভাবে থাকতে পারবে ও তাকে সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোর জন্য কী ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ করা হবে, সে বিষয়ে এই আইনে স্পষ্টভাবে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
প্রবন্ধটি লিখেছেন চেন্নাইয়ের আইনজীবী অম্বা সালেলকর। অক্ষমতাজনিত আইন এবং নীতির ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ আগ্রহ রয়েছে।