গর্ভাবস্থা: এই সময়ে ঘুমের সমস্যা কি একটা স্বাভাবিক ঘটনা?

গর্ভাবস্থা: এই সময়ে ঘুমের সমস্যা কি একটা স্বাভাবিক ঘটনা?

Published on

একজন সন্তানসম্ভবা মহিলার শরীরে এমন সব হরমোনজনিত ও শারীরিক পরিবর্তন ঘটে যার ফলে তার ঘুমের গুণগত মান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গর্ভাবস্থার একেবারে শেষ পর্যায়ে ঘুমের সমস্যার ক্ষেত্রেও বদল ঘটতে দেখা যায়। নীচে এমনই কয়েকটি গর্ভাবস্থাকালীন ঘুমজনিত সমস্যার উল্লেখ করা হল-

  • গর্ভাবস্থাকালীন শারীরিক ও মানসিক চাপের ফলে মহিলাদের মধ্যে ঘুমের সমস্যা দেখা যায়

  • শরীরে প্রোজেস্টেরন নামক হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়

  • গর্ভস্থ ভ্রূণের বিকাশের ফলে শরীরে একটা অস্বস্তি, ব্যথা ও বেদনার
    বোধ জন্মায়

  • রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণে দিনেরবেলায় ঘুমের ঝোঁক দেখা যায়

  • ক্লান্তি থেকে পায়ের পেশিতে টান পড়ে ও পা ভারী হয়ে ওঠে

  • রাতে শোওয়ার সময়ে প্রায়শই অম্বল ও বুকজ্বালার মতো সমস্যা দেখা দেয়

  • রক্ত চলাচলের পরিমাণ বেড়ে যায় বলে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা
    দেখা যায়

  • পায়ে অনবরত শিরশিরানি অনুভূত হওয়ার ফলে রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম (আরএলএস) দেখা দেয়

  • নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য স্লিপ অ্যাপনিয়া এবং নাক ডাকার সমস্যা বাড়ে

  • অত্যধিক মানসিক উদ্বেগের কারণে নিদ্রাহীনতা বা ইনসমনিয়া দেখা দেয়

ঘুমের সমস্যা দূর করার জন্য কী করা জরুরি

যদি কোনও গর্ভবতী মহিলা গুরুতর ঘুমের সমস্যা বা ঘুমজনিত নানারকম সমস্যায়  আক্রান্ত হয় তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কয়েকটি উপায় রপ্ত করতে পারলে ঘুমের সমস্যার উন্নতি ঘটানো সম্ভব হয়। যেমন-

  • শরীরচর্চা ঘুমের গুণগত মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু রাতে ঘুমানোর সময় বা তার কাছাকাছি সময়ে শরীরচর্চা না করাই ভালো

  • স্নায়ুবর্ধক বা উত্তেজক পানীয় অথবা খাদ্য যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে সক্ষম তা এড়িয়ে চলা জরুরি

  • মিষ্টি জাতীয় খাবার যেহেতু শরীরের এনার্জির মাত্রা বাড়িয়ে দেয় তাই রাতে এইজাতীয় খাবার না খাওয়াই শ্রেয়

  • রাতে ঘুমানোর আগে মনকে শান্ত, স্থির রাখা জরুরি। এজন্য উষ্ণ জলে স্নান করা, মিষ্টি সুরের গান শোনা বা এমন কাজ করা দরকার যা একজন মানুষের মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে

  • দিনের বেলায় প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে এবং রাতে শোওয়ার সময়ে জল খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে

  • যদি দিনের বেলায় বিছানায় একটু গড়িয়ে নেওয়ার ইচ্ছা হয় তাহলে তা দিনের প্রথমভাগে করে নেওয়া উচিত। রাতে শোওয়ার সময়ের কাছাকাছি তা একেবারেই করা ঠিক নয়

  • রাতে শোওয়ার আগে অল্প পরিমাণে খাওয়াদাওয়া করা উচিত। তবে মাঝরাতে যাতে খিদে না পায় সেদিকে লক্ষ রাখা জরুরি

  • পিঠে ও পেটে আরাম পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত বালিশ ব্যবহার করা যেতে পারে

এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ হল যদি কোনও সন্তানসম্ভবা মহিলা শরীরে কোনওরকম সমস্যা অনুভব করে তাহলে তার উচিত তক্ষুণি ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়।

logo
হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন
bengali.whiteswanfoundation.org