আমি আমার মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে কার কাছে পরামর্শ নেব?

আমি আমার মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে কার কাছে পরামর্শ নেব?

শারীরিক সমস্যার জন্য আমরা যেমন ডাক্তারের কাছে যাই, ঠিক তেমনই মানসিক সমস্যার সমাধান করার জন্য আলাদা বিশেষজ্ঞ রয়েছেন।

আপনারা সকলেই হয়তো দাঁতে ব্যথা হলে ডেন্টিস্টের কাছে যান, হাড়ে ব্যথা হলে অর্থোপেডিকের কাছে যান। বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে আলাদা বিশেষজ্ঞের ব্যাপারে হয়তো আপনারা সকলেই জানেন। এবার তাহলে জেনে নেওয়া দরকার যে মানসিক সমস্যা হলে কি করা উচিৎ। 

এই প্রচ্ছদটিতে আমরা সেই সকল বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কথা বলব যারা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন এবং রোগ নির্ণয় থেকে তা সারিয়ে তুলতে সাহায্য করেন। এর মধ্যে পড়ছেন সাইকিয়াট্রিস্ট, ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট, কাউন্সেলর, মানসিক রোগের জন্য সমাজসেবী এবং নার্স।

এবার আমরা এক এক করে প্রত্যেক বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলব, যাতে আপনি বুঝতে পারেন প্রয়োজনের সময় আপনি কার কাছে যাবেন।

সাইকিয়াট্রিস্ট

সাইকিয়াট্রি কি?

সাইকিয়াট্রি হল একধরণের চিকিৎসা বিদ্যা যার দ্বারা বিভিন্ন মানসিক রোগ বোঝা, নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয় যা অনুভূতি, ব্যাবহার এবং বুঝতে পারার উপর প্রভাব ফেলে। সাইকিয়াট্রি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সাইকিয়াটিস্ট বলে।  

সাইকিয়াট্রিস্ট কে?

একজন সাইকিয়াট্রিস্ট হলেন যিনি মানসিক সাস্থের সমস্যার চিকিৎসা করেন। তাঁদের মানুষের মস্তিষ্কের বিভিন্ন কাজ ও মস্তিষ্ক ও শরীরের সম্পর্কের বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মানসিক ও শারীরিক সমস্যার পার্থক্য সম্পর্কে তাঁরা সবচেয়ে বেশি তথ্য দিতে পারেন।

একজন সাইকিয়াট্রিস্ট কিভাবে তাঁর রোগীর সমস্যাগুলি বলতে পারেন?
যেহেতু তাঁরা মানসিক রোগের ডাক্তার, তাঁরা রোগীর উপর অনেক সাইকোলজিকাল পরীক্ষা করেন, যাতে তাঁদের মানসিক অবস্থার কথা বলতে পারেন। এই পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর তাঁরা রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞ্যান অর্জন করেন এবং তাঁদের কে চিকিৎসা করার সঠিক পদ্ধতি এবং ওষুধপত্র বাতলে দেন।

সাইকিয়াট্রিস্টরা কি কি চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাবহার করেন?
সাইকিয়াট্রিস্টরা ওষুধপত্রের সঙ্গে বেশ কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাবহার করেন। তাঁরা রোগীর অবস্থা অনুযায়ী তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। রোগীর যদি ওষুধপত্রের সঙ্গে সাইকো থেরাপির প্রয়োজন হয় তখন তাঁরা বলেন একজন ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্টের কাছে যেতে। 

সাইকিয়াট্রিস্টরা কোথায় কাজ করেন?

সাইকিয়াট্রিস্টরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেন যেমন – ডাক্তারখানা, সাধারণ মনোরোগের হাসপাতালে, বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে, কমিউনিটি সেন্টারে, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে, নার্সিং হোমে, পুনর্বাসন কেন্দ্রে, শিল্প প্রতিষ্ঠানে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে, নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানে, আদালত এবং হাজতে, স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অন্যান্য জায়গায়।

সাইকোলজিস্ট

সাইকোলজি কি?

সাইকোলজি হল মানুষের মনের ও আচার আচরণের একটি বৈজ্ঞানিক পড়াশুনা। আমরা আমাদের চিন্তাভাবনা, অনুভূতি ও আবেগের কারণে যে যে কাজগুলি করা থাকি, তা সবই পরীক্ষা করা হয়। সাইকোলজিকাল জ্ঞ্যানের কারণে আমরা বুঝতে পারি মানুষ কি ভাবে নিজেদের সমস্ত সমস্যা এমনকি মানসিক সমস্যারও সমাধান করতে পারে।

একজন সাইকোলজিস্ট কে?

সাইকোলজিস্ট হল তাঁরা, যাঁদের সাইকোলজির উপর ডিগ্রি রয়েছে এবং যারা মানুষের আচার আচরণ বুঝতে পারদর্শী। বৈজ্ঞানিক মাধ্যমে তাঁরা মানুষের চিন্তাভাবনা, কাজ, ধারণা ইত্যাদি পড়াশুনা করেন। প্রমাণ-জড়িত পদ্ধতির মাধ্যমে তাঁরা মানুষের জীবনের নানা রকম সমস্যা, যেমন সম্পর্কের সমস্যা, অভিভাবকত্বের সমস্যা, বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা, জীবনধারা ও সাস্থের সমস্যা, অসুস্থতা ইত্যাদি সমস্যার সামাধান করতে সাহায্য করেন। তাঁরা তাঁদের চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষের দুশ্চিন্তা, হতাশা, খারাপ খাদ্যাভ্যাস, মাদকাসক্তি সারিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। 

যদিও তাঁদের কাজের বিষয়বস্তুগুলি এক, একজন সাইকোলজিস্ট মানুষকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করেন।

১। ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্টঃ চেষ্টা করেন মানুষের মনোরোগের সমস্যার সমাধান বের করার এবং তাঁদেরকে মানসিক ভাবে সুস্থ করে তোলার। অস্বাভাবিক কিছু মনোরোগের জন্য রোগীরা দুশ্চিন্তা ও হতাশাগ্রস্থ এবং মাদকাসক্ত হয়ে পড়তে পারেন।

২। কাউন্সেলরঃ সে সব মানুষদেরকে নিয়ে কাজ করেন যাঁদের মানসিক অসুস্থতা দেখা যায়নি, তবে দেখা গেছে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তাঁরা সেই সমস্যাগুলির কারণগুলি খুঁজে বার করেন যেমন একাকীত্ব, পূর্ববর্তী বা বর্তমান সম্পর্কের সমস্যা, বা আচরণগত সমস্যা, ইত্যাদি। তাঁরা মানুষকে সাহায্য করেন তাঁদের জীবনধারাকে বদলাতে এবং একটি নির্দিষ্ট পথে জীবনকে চালিত করেন।

৩। স্কুলের সাইকোলজিস্টঃ শিশুদের বা তরুণদের সঙ্গে কাজ করে তাদেরকে নানা জিনিসপত্র শেখানো বা তাদের বিকাশের জন্য কাজ করেন। তাঁরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত কোনও সংস্থায় কাজ করেন।

৪। ফরেনসিক সাইকোলজিস্ট: আইন সম্পর্ক দিকগুলির সাইকোলজিকাল বিষয়গুলি দেখার চেষ্টা করেন, যার মধ্যে রয়েছে অপরাধীর তদন্ত, অপরাধীর আচরণের মানসিক সমস্যাগুলি, এবং তাদের চিকিৎসার কাজ। তাঁদেরকে অপরাধীদের সাইকোলজিস্ট, আইনি সাইকোলজিস্ট বা ক্রিমিনোলজিস্টও বলা হয়।

৫। স্নায়ুগত-সাইকোলজিস্টঃ তাঁরা মস্তিষ্ক ও স্নায়ুগত-মানসিক সম্পর্কের উপর কাজ করেন, যেমন দৃষ্টিশক্তি, স্মৃতিশক্তি, ও ঘ্রাণ। তাঁরা মানুষের পুনর্বাসন বা অন্যান্য মস্তিষ্কের আঘাত বা স্নায়ুগত সমস্যা যেমন স্ট্রোক, ডেমেনসিয়া, টিউমার সারিয়ে তুলতে সাহায্য করেন। 

৬। বৃত্তিমূলক সাইকোলজিস্টঃ তাঁরা কর্মসংস্থানের কাজকর্ম ও সেখানকার কর্মীদের একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করেন। এই সব সাইকোলজিস্টরা সংস্থার লোকজনের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করেন, ভাল কর্মী নিয়োগ করতে সাহায্য করেন, নতুন কর্মপদ্ধতি গড়তে সাহায্য করেন, ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেন। তাঁরা কর্মীদের জন্য নতুন মানসিক পরীক্ষা তৈরি করেন এবং কোনও ব্যক্তি কোন কাজে ভাল, সেটি নির্ণয় করতে সাহায্য করেন। 

সাইকোলজিকাল মূল্যায়ন মানে কি?

সাইকোলজিকাল বা মানসিক মুল্যায়ন হল সাইকোলজিস্ট দ্বারা করা একটি পরীক্ষা, যার মাধ্যমে তাঁরা মানুষ কি ভাবে, কিরকম আচরণ করেন, এই সব পরীক্ষা করেন। এটি করার বিভিন্ন উপায় আছে, যেমন সাক্ষাৎকার, মুল্যায়ন করা, বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে অন্য তথ্য জোগাড় করা ইত্যাদি।

বিঃদ্রঃ এর মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষা নেওয়া হয়, এবং সেগুলির ফলাফল নিয়ে পরবর্তী কালে বিভিন্ন গবেষণা করা হয়।

সাইকোলজিস্টরা মানুষের বিভিন্ন রকম মুল্যায়ন করে, তাঁদের ক্ষমতা ও আচরণের উপর একটি রিপোর্ট তৈরি করেন। এই রিপোর্ট দিয়ে তাঁদেরকে কি কি চিকিৎসা করাতে হবে, সেগুলি নির্ণয় করা হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে যেমন তাঁদের ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে, বড়দের ক্ষেত্রে তাঁদের মানসিক সমস্যা হলে, সেই সমস্যার চিকিৎসা পদ্ধতি ঠিক করা হয়। সব তথ্য এক একজনের সাইকোলজিকাল রিপোর্টে তুলে রাখা হয়।

সাইকোলজিকাল পরীক্ষা কী?

সাইকোলজিকাল টেস্টের মাধ্যমে, মানুষের ক্ষমতা, বুদ্ধি ইত্যাদি মাপা হয়। এই সব টেস্টগুলি নানা রকম সাইকোলজিকাল তথ্যের উপর নির্ভর করে।

এই পরীক্ষার মধ্যে অনেক রকম কাজ করতে দেওয়া হতে পারে, যেমন কাগজে-কলমের কাজ, কম্পিউটারের কাজ, ধাঁধা তৈরি করার কাজ, ছবি আঁকা বা পুরনো তথ্য মনে করার কাজ। অন্য মানুষজনের কথাবার্তা বা তাঁদের কাজকর্ম লক্ষ্য করার কাজও দেওয়া হয়। এই সব পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী একজন সাইকোলজিস্ট  একটি মানুষের ব্যাপারে বলতে পারেন যে সে কতটা কি করতে পারে। এছাড়াও মানুষের অচেতন অবস্থায় তাঁদের পরীক্ষা নেওয়া হয়, যেমন রর্সচার্চ পরীক্ষা।

সাইকোলজিকাল টেস্টের মাধ্যমে কী কী মূল্যায়ন করা হয়?

অভিযোজিত ব্যাবহারের মুল্যায়নঃ এটি দিয়ে মানুষের সামাজিক ও ব্যাবহারিক দক্ষতা মাপা হয়, যেমন একটি শিশু সমাজে অন্যদের মাঝে কি রকম ব্যাবহার করে, তারা স্কুল বা বাড়িতে কি ভাবে মানিয়ে নেয়, ইত্যাদি। বোঝার ক্ষমতা পরীক্ষা করার সঙ্গে এই পরীক্ষাটিও করা হয়, বিশেষত তাঁদের ক্ষেত্রে যাঁদের কোনও কিছু বুঝতে খুব অসুবিধা হয়।

তৎপরতা পরীক্ষাঃ বিভিন্ন রকম কাজ করতে একটি মানুষ কতটা সক্ষম, সেটির পরীক্ষা করা হয় এর মাধ্যমে। যেমন কারোর মধ্যে পরিশ্রম করার ক্ষমতা বেশি থাকে, কারোর ভাষাজ্ঞ্যান বেশি থাকে, কারোর সৃজনশীলতা বেশি থাকে। তৎপরতা পরীক্ষার মাধ্যমে কে কোন কাজ করতে বেশি দক্ষ সেটি মাপা হয় এবং কোন কাজটি সে ভাল করে করতে পারবে সেটি নির্ণয় করা হয়।

বোধ বিষয়ক পরিক্ষাঃ এটির মাধ্যমে মানুষের সমস্যা সমাধান করার ক্ষমতা, তাঁদের বিচারবুদ্ধি, স্মৃতিশক্তি, বাক্যালাপ করার ক্ষমতা মাপা হয়। অনেক সময় এটিকে বুদ্ধির পরীক্ষা বলা হয়, কারণ এটি দিয়ে তাঁদের পড়াশুনা করার ক্ষমতাও মাপা হয়। একটি শিশু কোন কাজে কতটা ভাল তা নির্ণয় করা হয় এবং তার ক্ষমতা পুরোপুরি ব্যাবহার করানো শেখানো হয়।

শিক্ষাগত ও যোগ্যতা পরীক্ষা: এটি দিয়ে একজন মানুষ একটি বিষয় কতটা শিখতে পারছেন বা শিখতে সমস্যা হচ্ছে, তা মাপা হয়। একটি শিশু পড়াশুনায় কতটা এগিয়েছে তা মাপা হয় এই পরীক্ষার সাহায্যে।  

ফরেনসিক মানসিক পরীক্ষাঃ এটির মধ্যে রয়েছে একটি মানুষের স্নায়ুগত-মানসিক মুল্যায়ন যা দিয়ে বোঝার চেষ্টা করা হয় লোকটি কোনও অপরাধ করেছেন কিনা। এটি মূলত আইনি ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত হয়।  

মানসিক স্বাস্থ্যের মুল্যায়নঃ এটির মাধ্যমে মানুষের চিকিৎসার ইতিহাস, পরিবারের ইতিহাস এবং তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা বোঝা হয়। এই মুল্যায়নের মাধ্যমে বোঝা হয় ব্যক্তিটির মানসিক ভারসাম্য ঠিক আছে কিনা এবং তা থাকলে সেটির চিকিৎসার পদ্ধতি নির্ণয় করা হয়।  

স্নায়ুগত-মানসিক পরীক্ষাঃ মস্তিষ্ক কি ভাবে কাজ করে এবং মস্তিষ্কের সমস্যা এটি দিয়ে বিচার করা হয়, যেমন, যদি একটি ব্যক্তির মস্তিষ্কে আঘাত লেগে থাকে বা তাঁর ডেমেনসিয়া হয়ে থাকে, তাহলে তাঁর স্মৃতিশক্তি পরিক্ষা করতে বলা হয়।

ব্যক্তিত্ব মুল্যায়নঃ এটি মূলত মানুষের ব্যক্তিত্ব নির্ণয় করতে সাহায্য করে। সে কি সকলের সাথে মিশতে পারে? মিশতে পারে না? এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কি করেন, সেগুলি নির্ণয় করে।

কাউন্সেলর

কাউন্সেলিং কী?

পরামর্শের মাধ্যমে মানুষের নানা রকম আবেগজনিত সমস্যা, আচরণগত সমস্যা, সমাজের জন্য সমস্যা ইত্যাদির সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্রে মানুষ নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়, পরামর্শের মাধ্যমে সরাসরি ভাবে বা কোন কিছুর সহায়তা নিয়ে মানুষকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে, ঠিক পথে চালিত করতে সাহায্য করা হয়। এটি সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে করা হয়। এটি বিভিন্ন কাজে ব্যাবহার করা হয়ঃ 

  • নানা রকম পরিস্থিতি বা ঘটনার কারণে মানুষের মনে যে চাপ সৃষ্টি হয়, সেগুলিকে মেটানোর চেষ্টা করা হয়।

  • মানুষের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, ও অনুভূতিগুলি বোঝার চেষ্টা করা হয়, যেগুলি তাঁদের কোনও কাজ করতে বাধ্য করে।

  • অতীতের চেয়ে বর্তমান নিয়ে ভাবতে শেখানো হয়

  • সৃজনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করা হয়।

  • চিন্তাশক্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করা হয়, যা থেকে একজন ব্যক্তি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

একজন কাউন্সেলর কে?

একজন কাউন্সেলর হলেন একজন বিশেষজ্ঞ যিনি মানুষের সাথে মেলামেশা করে তাঁকে পরামর্শ দেন। তাঁরা মানুষের কথা শোনার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, এবং তাঁদের কথা শুনে তাঁদেরকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারেন। তাঁরা সাইকোলগিস্ট বা সাইকিয়াট্রিস্টদের মতোই অনেক বিষয়ে মানুষকে সাহায্য করতে পারেন।

যদি একজন পরামর্শক বুঝতে পারেন যে একজন মানুষের অবস্থা কিছুতেই উন্নতি হচ্ছে না, তাহলে তাঁরা মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে গিয়ে সঠিক চিকিৎসা করাতে বলেন।

সাইকিয়াট্রিক সমাজসেবী

একজন সাইকিয়াট্রিক সমাজসেবী মানুষকে তাঁর মানসিক সমস্যাগুলির সাথে জড়িত জীবনের বা সামাজিক সমস্যাগুলি সমাধান করতে সাহায্য করেন। একজন রোগীর সম্পর্ক, কর্মক্ষেত্রের পরিস্থিতি এবং জীবনধারায় নানা সমস্যা হতে পারে। একজন সমাজসেবী সেই ব্যক্তিকে এই সমস্যাগুলি থেকে বেরোতে সাহায্য করেন। তাঁদের নিয়মিত কাজগুলি হলঃ

  • মানুষের অনুভূতিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক বা মানসিক চাহিদাগুলি বোঝা।

  • রোগী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদেরকে মানসিক অসুস্থতা সম্পর্কে বোঝানো এবং তাঁর সঠিক চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা।

  • রোগীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা বুঝে তাঁর জন্য কমিউনিটির পক্ষ থেকে সাহায্য নেওয়া।

  • রোগী, তাঁর পরিবারে সদস্য ও চিকিৎসকের মধ্যে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করা

  • রোগীদেরকে কমিউনিটির অন্তর্গত করা।

  • তাঁরা রোগীদেরকে পরিবার ও কমিউনিটির কাছে ফিরিয়ে আনতে একটি বড় ভুমিকা পালন করেন।

সাইকিয়াট্রিক নার্স

একজন সাইকিয়াট্রিক নার্স হল একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। যিনি মানুষের রোগ নির্ণয়, মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসা করতে পারেন। তাঁরা এক একজন, তাঁদের পরিবার, গোষ্ঠী বা কমিউনিটির সাথে একজোট হয়ে রোগীর মানসিক চাহিদা বোঝার চেষ্টা করেন। তাঁরা শিক্ষক, পরামর্শক, চিকিৎসকের ভুমিকাও পালন করে থাকেন।

Related Stories

No stories found.
logo
হোয়াইট সোয়ান ফাউন্ডেশন
bengali.whiteswanfoundation.org