বর্ণনা: ভরত কখনো মানসিকভাবে শান্ত বা নিরুদ্বেগ থাকতে পারেন না
তিরিশ-ঊর্ধ্ব ভরত সারাক্ষণ উদ্বেগে ভোগেন আর উনি কখনো মানসিকভাবে শান্ত বা নিরুদ্বেগ থাকতে পারেন না। ভরত তথ্য প্রযুক্তির কাজে নিযুক্ত এবং তাঁর ওপর সঠিক সময়ে কাজ শেষ করার চাপ সবসময় থাকে। এই সমস্যা যখন তাঁর কর্মক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করতে আরম্ভ করলো, তখন এক বন্ধুর পরামর্শে উনি ডাক্তারের কাছে যান।
ভরতের স্ত্রী তাঁর বন্ধুকে জানান যে গত কিছু মাস ধরে ভরত সব সময় বিরক্ত আর খিটখিটে থাকেন। সারারাত ঘুমানোর পরেও সকালে উঠে তাঁর ক্লান্ত লাগে। তাঁর স্ত্রী আরও বলেন যে উনি সব কিছু ভুলে যান আর কোন কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন না। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলার সময় ভরত স্বীকার করেন যে উনি ছোট ছোট কারণে রেগে যাচ্ছেন আর কাজের চাপে বিহ্বল হয়ে পড়ছেন। কর্মক্ষেত্রে নিজের রাগ প্রকাশ করতে না পেরে বাড়ি ফিরে নিজের স্ত্রী আর সন্তানদের ওপর চিৎকার আর রাগারাগি করছেন। নিজের এইধরনের ব্যবহারে উনি লজ্জা আর অপরাধ বোধে ভুগছেন। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন যে তাঁর সব সময় উদ্বিগ্ন আর শঙ্কিত লাগে কি না, তখন ভরত জোরে জোরে মাথা নাড়িয়ে ‘হ্যাঁ’ বলেন।
আরও কিছুক্ষণ সময় নিয়ে ডাক্তারকে ভরত নিজের উপসর্গের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। সব শুনে ডাক্তার নির্ণয়ে পৌঁছান যে ভরত জেনেরালাইজড অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারে (সার্বিক উদ্বেগজড়িত বিকারে) ভুগছেন। ভরত এই জেনে আশ্বস্ত বোধ করলেন যে এটা কোন মারাত্মক ব্যাধি না এবং সচরাচর অনেকের মধ্যেই এই ধরনের উপসর্গ দেখা দেয় যা চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভরত ওষুধ খাওয়া আরম্ভ করলেন। প্রাথমিক পর্যায় কিছু সপ্তাহ ধরে সমস্যার উপচারের জন্য তাঁকে থেরাপিস্টের সাথে আলোচনা (কাউন্সেলিং) করতে বলা হল। চিকিৎসা শুরু করার মাস দুই পরেই ভরত ডাক্তারকে জানালেন যে জীবনে প্রথমবার কোন দুশ্চিন্তা বা অশান্তি নিয়ে উনি সারাক্ষণ উদ্বিগ্ন বোধ করছেন না। ভরত নিজে স্বীকার করলেন যে উনি এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। অফিসের বার্ষিক মূল্যায়ন সমীক্ষায় ভরত ভালো ফল করেছেন। তাঁর স্ত্রী ভরতের ব্যবহারে আসা পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করে আশ্বস্ত বোধ করছেন।
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় বিভিন্ন রোগীর অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এই কাল্পনিক বর্ণনাটি বাস্তব পরিস্থিতি বোঝানোর জন্যে তৈরি করা হয়েছে। এটি কোনও ব্যক্তি বিশেষের অভিজ্ঞতা নয়।